বাংলাদেশের ১৫ টি সেরা ভ্রমণ স্থান – Best Places to visit in Bangladesh [ Bengali Guide ]


পাহাড় সমুদ্র নদী ঘেরা সুজলা সুফলা, শস্য শ্যামলা বাংলাদেশে বহু বেড়ানোর জায়গা বা পর্যটন স্থান আছে, ভ্রমনপিপাসু বহু মানুষ দেশ বিদেশ থেকে আসে বাংলাদেশের এই সৌন্দর্য্যে ঘেরা এই স্থানগুলি পরিদর্শনে। বাংলাদেশের ১৫ টি অন্যতম সেরা ভ্রমনস্থান গুলি হল-  

Best Places to visit in Bangladesh

১. কক্সবাজার

বাংলাদেশের  দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি।  এর অপরুপ সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করে সকলকে। পূর্বে কক্সবাজারের বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল যেমন পালঙ্কি, পানোয়া ইত্যাদি। ১২২ কিমি বিস্তৃত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত । 

কক্সবাজার
কক্সবাজার

বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর ছাড়াও এখানে আছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা জিনিসের মার্কেট বার্মিজ মার্কেট, রয়েছে ফিস একুরিয়াম, ওয়াটার বাইকিং,বিচ বাইকিং,কক্স কার্নিভাল সার্কাস শো,ফিউচার পার্ক, টেকনাফ জিওলজিক্যাল পার্ক, নাইট বিচ কনসার্ট ইত্যাদি।

২. খাগড়াছড়ি

২৬৯৯.৫৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, অপূর্ব সৌন্দর্য্য মন্ডিত এই স্থানটির চারদিক পাহাড়, ঝর্ণা, সবুজে ঘেরা। এখানকার দর্শনীয় স্থান গুলি হল – আলুটিলা গুহা, কমলক  ঝর্ণা গড়াছড়ি স্টেডিয়াম,  দীঘিনালা ঝুলন্ত  ব্রীজ,  রিছাং ঝর্ণা, শান্তিপুর অরন্য কুঠির,।

খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ি

৩. রাঙামাটি

বাংলাদেশের বৃহওম জেলা রাঙামাটি বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। ৬১১৬.১৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট এই পার্বত্য জেলায় প্রচুর মনোরম স্থান আছে, যেমন আসামবস্তি ব্রীজ উপজাতীয় জাদুঘর, ওয়াজ্ঞা চা এস্টেট, কর্ণফুলি কাগজ কল, কংলাক পাহাড়, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, কাপ্তাই হ্রদ, ইত্যাদি। 

রাঙামাটি
রাঙামাটি

৪. লালবাগ কেল্লা

বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন প্রিয় স্থান লালবাগ কেল্লা ঢাকার দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে  বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। মুঘল সুবাদার মুহাম্মদ আজম শাহ কর্তৃক ১৬৭৮ সালে এই মুঘল দুর্গ টির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। এখানে একটি জাদুঘর রয়েছে,, এখানে দেখা যায় অসাধারণ কিছু হাতে আঁকা ছবি, শায়েস্তা খাঁ এর ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, এছাড়াও সেই সময়কার  পোশাক, বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র, প্রচলিত মুদ্রা ইত্যাদিও দেখতেও ভিড় হয় পর্যটকদের।

হায়দরাবাদের ঐতিহাসিক জায়গাগুলি – যেগুলি না দেখলেই নয়

৫. নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র

বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় নীলগিরি পাহাড়ের চূড়ায় গড়ে ওঠা জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র যা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র তা হল নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র। এই নীলগিরি  পাহাড়টির উচ্চতা ২২০০ ফুঁট। অপরুপ এই স্থানটিকে বাংলাদেশের দার্জিলিং ও বলে থাকেন অনেকে।

৬. ইন্দ্রাকপুর কেল্লা

বাংলার সুবাদার মীর জুমলা মুন্সীগঞ্জ শহরে ইন্দ্রাকপুরে এই মোঘল স্থাপত্যের এই অনন্য নির্মান করেন ১৬৬০ খ্রীস্টাব্দে ।  ইটের তৈরি এই দুর্গটি নির্মিত হয়েছিল তৎকালীন সময়ে মগ জলদস্যু ও পর্তুগিজ আক্রমণের হাত থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ সমগ্র এলাকাকে রক্ষা করার জন্য।  ইছামতী, ধলেশ্বরী, মেঘনা এবং শীতলক্ষা এই নদীরগুলির অবস্থান ইন্দ্রাকপুর কেল্লাটির তিন কিলোমিটারের মধ্যে। ১৯০৯ সালের  ইদ্রাকপুর দুর্গটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয়।

৭. তাজমহল বাংলাদেশ

ঢাকা থেকে ১০ মাইল পূর্বে পেরাব, সোনারগাঁও তে তাজমহলের অবিকল প্রতিরুপ নির্মান করেন আহসানুল্লাহ মনি নামক একজন ধনী চলচ্চিত্র নির্মাতা । বাংলাদেশে যাদের ভারতে গিয়ে এই বিশ্বের অন্যতম সুন্দর আশ্চর্য গুলির মধ্যে একটি তাজমহল দেখার সামর্থ্য নেই তাদের তাজমহল দেখার স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি এই তাজমহলের রেপ্লিকাটি নির্মান করেন। 

দেখে নিন ব্যাঙ্গালোরের সেরা ঘোরার জায়গাগুলি

৮. সুন্দরবন

সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশে বিশ্বের সবথেকে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অখন্ড বনভূমি। এই অপরূপ বনভূমি   বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা ছাড়াও ভারতেও বিস্তৃত। সুন্দরবন মোট ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত, যার মধ্যে  ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে।  সারা বিশ্ব থেকে বহু পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন।  

সুন্দরবন
সুন্দরবন

৯.  বুদ্ধ ধাতু জাদি

বান্দরবন স্বর্ণ মন্দির বা বুদ্ধ ধাতু জাদি হল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হীনযান বৌদ্ধ মন্দির যা বাংলাদেশের বান্দরবন শহরের বালাঘাটা এলাকায় অবস্থিত।  বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে। বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করে সবাইকে। এবং এখানকার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হল এই মন্দির। দেশ বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী আসে এই মন্দিরে। তবে এই স্বর্ণমন্দিরটি স্বর্ণ নির্মিত নয়, এর রঙ সোনালী হওয়ায় এর নাম হয়েছে স্বর্ণমন্দির।

১০. সিলেট

সিলেট বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটক প্রিয় স্থান যা  শিল্প, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনৈতিক দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ধনী জেলা। একাধিক দর্শনীয় স্থান আছে এখানে, অপূর্ব সুন্দর জৈন্তিয়া পাহাড়, সৌন্দর্য্যে ঘেরা জাফলং, এ প্রচুর পর্যটক আসে।

১১. সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

বাংলাদেশের  একটি বিখ্যাত পর্যটন স্থান সেন্ট মার্টিন দ্বীপ।  বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে এই প্রবালদ্বীপটি মায়ানমার এর উপকূল থেকে ৮ কিমি পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় এর অবস্থান। স্থানীয় লোকেদের আছে এর আরেকটি নামও শোনা যায়, নারিকেল জিঞ্জিরা, এই নামকরণের কারণ এখানে প্রচুর নারকেল পাওয়া যায়।  

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

১২. ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান

বাংলাদেশের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় উদ্যান ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, এর অবস্থান গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর উপজেলায়।  ৫,০২২ হেক্টর জায়গা জুড়ে  বাংলাদেশ সরকার ভাওয়াল শালবনে গড়ে তোলেন এই উদ্যান। বাংলাদেশের আকর্ষণীয় একটি পর্যটন কেন্দ্র হল এই উদ্যান যা জনপ্রিয় পিকনিক স্পটও। এখানকার উল্লেখযোগ্য পিকনিক স্পট গুলি হল-  আনন্দ, কাঞ্চন,সোনালু,অবকাশ ইত্যাদি। 

১৩. নিঝুম দ্বীপ

বাংলাদেশের নিঝুম দ্বীপ যা পূর্বে চর-ওসমান নামে পরিচিত ছিল তা নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত। এখানকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান গুলি হল – কমলার দ্বীপ, ম্যানগ্রোভ বন,  চোয়াখালী ফরেস্ট ও চোয়াখালী সমুদ্রসৈকত।

ভ্রমণপিপাসুদের জন্যে রইলো কলকাতার সেরা জায়গাগুলির লিস্ট

১৪. বিছানাকান্দি

পাহাড়ের সবুজ সমারোহে বিছানাকান্দি বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন এলাকা। খাসিয়া পর্বতের বিভিন্ন স্তর এসে মিলেছে এখানে,  ছোট বড় বিভিন্ন পাথরের  ওপর দিয়ে স্বচ্ছ জলের স্রোত ছুটে আসে যা দেখতে লাগে অপূর্ব। 

বিছানাকান্দি
বিছানাকান্দি

১৫. কুয়াকাটা

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটির দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার। এই পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয় এই সমুদ্র সৈকতটি সাগর কন্যা নামে পরিচিত। এর  নৈসর্গিক পরিবেশ অপরূপ, এই সৈকত থেকে সুর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়ই অসামান্য সুন্দর লাগে দেখতে।  

Recent Posts