ভাষা দিবস নিয়ে কিছু কথা, ভাষা আন্দোলনের কারণ, তারিখ, রচনা ~ Essay on Bangla Bhasa Diwas


মানুষের চিন্তাকে রূপ দেয় ভাষা। চিন্তাশক্তিকে জাগিয়ে তোলা ও উন্নত করার ক্ষেত্রে ভাষার ভূমিকা অনস্বীকার্য। যে ভাষায় মানুষ প্রথম কথা বলতে শেখে ,চিন্তা করতে শেখে সেই মাতৃভাষা মানুষের আত্মপ্রকাশের সবচেয়ে বড় সহায়ক।এর সুপ্রতিষ্ঠা আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। 

ভাষা দিবসের শুভেচ্ছা, শহীদ দিবস নিয়ে কিছু স্লোগান, উক্তি, ছবি ও কবিতা

bangla-bhasa-dibosh-rachana (1)

ভাষা দিবস রচনা – কবে কেন ও কিভাবে হয়েছিল ভাষা আন্দোলন

তাই বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মস্পর্শী ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মৃতিবিজড়িত দিন।   ১৯৫২ সালের এই দিনটি তে বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দবি রেখেছিল আন্দোলনরত ছাত্রদল আর যার ফলস্বরূপ তাদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে  শহীদ হন বেশ কয়েকটি তরুণ তরতাজা প্রাণ। 

ভাষা আন্দোলন

শহীদ দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত দিনটি, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  রূপে পালন করা হয়ে আসছে। এই দিনটি শুধুমাত্র ঐতিহাসিক দিন বা স্মরণের দিন নয় ;মাতৃভাষা প্রেমীদের কাছে সংগ্রামেরও স্মারক। তাই তো কবি কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে, “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি ,আমি কি ভুলিতে পারি’

মাতৃভাষার স্বীকৃতির দাবিতে বহু ভাষাভাষী দেশে একটি ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে যে জনমত গঠন তারই ফসল ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের’ স্বীকৃতি।    

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট : 

১৯৪৭ -এ স্বাধীনতা প্রাপ্তির মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক রাষ্ট্র হওয়ার পর বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের(বর্তমানে বাংলাদেশি) পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।ভারত হয়ে যায় ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং পাকিস্তান হয়ে যায় ধর্মীয় রাষ্ট্র।

পাকিস্তানে একটি ধর্মকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার সুবাদে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে কায়েম করার জন্য উর্দু ভাষাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় বাংলা ভাষাভাষী পূর্ব পাকিস্তানের মানুষেরা তা মেনে নিতে পারেনি যা ১৯৪৮ -এ আন্দোলনের আকার নেয় এবং ১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সোচ্চার হলে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় আবুল বরকত, আবদুস সালাম, আবদুল জব্বার ও রফিকউদ্দিন এর মতো কিছু তরুণ প্রাণ।

ভাষা দিবস রচনা

এছাড়া অসংখ্য মানুষ আহত হয়। সেদিন ঢাকার রাজপথে মাতৃভাষার জন্য শহীদদের এই বলিদান বাংলাদেশি মানুষদেরকে এক ইতিহাসের সম্মুখীন করে।

শামসুর রহমান তাই লিখেছিলেন, “উনিশশো বাহান্নর দারুণ রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি। বুকে নিয়ে আছো সগৌরবে মহীয়সী।”

উৎস :

প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তান ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের যে যৌক্তিকতা স্বীকার করেছিল সেখানেই ছিল একনায়কতন্ত্রের দৃষ্টিভঙ্গি যে কারণে এক ধর্মকে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন সফল হওয়ায় তারা একটিমাত্র ভাষা (উর্দুকে) রাষ্ট্রভাষা করার স্বপ্ন দেখেছিল, যেখানে পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষীদের ইচ্ছাকে ধুলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছিল।

যখন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে জিয়াউদ্দীন আহমদ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা রূপে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করেন তখন মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ তার প্রতিবাদ করেছিলেন।প্রাদেশিক মুসলিম লীগের পক্ষ থেকেও ১৯৪৬ সালে ঘোষণা করা হয় যে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা কিন্তু কার্যত তা হয়নি। কারণ পশ্চিম পাকিস্তানের উর্দুভাষী রাষ্ট্রপ্রধানদের ইচ্ছানুসারে পশ্চিম পাকিস্তানের মতো পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করা হয়েছিল।সংগ্রামের সূত্রপাত এখান থেকেই।

মাতৃভাষা দিবস

পূর্ব পাকিস্তানিরা এই চাপিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেনি। তারা বেছে নিয়েছিল আন্দোলন রাস্তা।পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষক ছাত্র এবং বুদ্ধিজীবী সংগঠন এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলনে সোচ্চার হন ।  বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা রূপে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদে মুখর হলে মোহম্মদ সলিমুল্লাহ, সৈয়দ আলী আশরাফ, সৈয়দ আলী আহমান,কাজী মোতাহার হোসেন এবং অন্যান্য শিক্ষাবিদরা সমর্থন জানান।

১৯৫০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান জানিয়ে দেন বাংলা ভাষা নয় ,পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দুই, এতে আন্দোলন আরও জোরদার হয়ে ওঠে ।দিকে দিকে মিটিং- মিছিল, গণ অবস্থানে জেরবার হয়ে যায় দেশ। অবশেষে  ১৯৫২ সালে ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন, এক সভায় উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করলে তা বারুদের আকার ধারণ করে। সরকারি এই নীতিকে মেনে নিতে না পেরে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথ বেছে নেয়।

আন্দোলনের রূপ:

সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের পক্ষ থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।ওই দিন পূর্ব পাকিস্তানের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ধর্মঘটে সামিল হওয়ার জন্য ডাক দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সরকারের এই নীতির প্রতিবাদে একটি প্রতিবাদ সভার আহ্বান করা হয়।

কিন্তু তার আগের দিন অর্থাৎ ২০ শে ফেব্রুয়ারি সকাল থেকেই ওই সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে অবমাননা করে ছাত্ররা প্রতিবাদ মিছিল বার করে। ঠিক সকাল নয়টায় ঢাকা শহরে যেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল ছাত্ররা ও বাংলা ভাষায় অনুরাগীরা সেই স্থানে হাজির হয়ে বাংলাভাষীকে রাষ্ট্রীয় ভাষায় পরিণত করার দাবি জানান ।এর ফলস্বরূপ  পুলিশ ছাত্রদের উপর নির্মম ভাবে লাঠিচার্জ করে  কিন্তু তাতেও ছাত্রসমাজকে তারা দমন করতে পারে নি।  

কাঁদানে গ্যাস দিয়ে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টাও চলে। কিন্তু কোনোভাবেই যখন ছাত্রদের আটকাতে  না পারায় পুলিশ বাহিনী সরকারের নির্দেশে গুলি চালায়। পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত হন বহু অনুরাগী। মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল তরতাজা কিছু তরুণ প্রাণ । যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন -আব্দুল সালাম, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবুল বারকত, আব্দুল জব্বার প্রমুখ; তাঁরা প্রত্যেকেই শহীদ হন। এরা অমর ভাষাশহীদ।  বিশ্বের ইতিহাসে রচিত হয়েছিল একটি কলঙ্কময় দিনের কথা; ইতিহাস যার সাক্ষী রইল।

স্বীকৃতি :

বহু ঝড়ঝাপটা কাটিয় সেই দিনটিতে জয় হয়েছিল বাংলা ভাষারই।কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে বসবাসকারী দুই বাঙালি ,রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস  হিসেবে ঘোষণার আবেদন জানান জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কোফি আন্নানের কাছে।

সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১- এর ১৭ ই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনেসকোর (UNESCO) প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং তদনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে ওই দিনটি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি যথাযথ মর্যাদার সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালন করে আসছে।

অন্যদিকে ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে  প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে জাতিসংঘ -এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যা ১১৩ সদস্য বিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।

মাতৃভাষা দিবসের প্রতিষ্ঠা ও বিস্তার:

২০০০ সালে মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের পর ২০০১  সালে দ্বিতীয় বার্ষিক উদযাপন হয়। ২০০২ সালে সারা বিশ্বের ৩৬০০ অনুন্নত ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং প্রতিটি ভাষা ই মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি  পাওয়ার যোগ্য বলে ঘোষণা করা হয় । ২০১৬ সালে ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও ভাষাশিক্ষায় গুরুত্ব আরোপিত হয়েছে।

ভাষা দিবস উদযাপন:

১৯৫২ খ্রীস্টাব্দ  থেকে প্রতি বছর এই বিশেষ দিনটি জাতীয় শহিদ দিবস হিসেবে উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। বর্তমানকালে প্রত্যেক বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে সর্বপ্রথম দেশের রাষ্ট্রপতি এবং পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,সংগঠন এবং সকল স্তরের মানুষজনের সমাগম হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

তাঁরা এখানে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে থাকেন, এবং এমন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে সেই কালজয়ী গানের  সুর  “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি ” বাজতে থাকে যা মনে দেশপ্রেমের এক অদ্ভুত চেতনা জাগায়।বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটি সরকারি ছুটির হিসেবে ঘোষিত হয়েছে ।শহীদ দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে রেডিও, টেলিভিশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। বাংলা একাডেমি, রাজধানী ঢাকায় একুশে বইমেলার আয়োজন করে যা চলে পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ধরে।

উপসংহার:

মাতৃভাষার স্বাধীনতা ,মানুষের জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পাওয়া এবং তার সর্বাঙ্গীন বিকাশের পথ । মাতৃভাষা মানুষের ঘুম ও জাগরণের ,আনন্দ ও যন্ত্রণার একমাত্র সাবলীল মাধ্যম। তাই মাতৃভাষা ই মানুষের জন্মগত অধিকার আর সেই অধিকারের অনুকূলেই  ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি যে আন্দোলন শুরু হয় বর্তমান যুগে তা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।

ভাষা আন্দোলনের মতো বিশেষ এই দিনটিতে  বীর শহীদদের প্রতি  শুধু আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা নিবেদন করলেই চলবে না; এই দিনটির তাৎপর্য প্রত্যেক মানুষকে উপলব্ধি করতে হবে এবং অন্যকেও  তা করাতে হবে আর তখনই মাতৃভাষার প্রতি আসল শ্রদ্ধা নিবেদন করা স্বার্থক হবে।

FAQ (সম্ভাব্য প্রশ্নাবলি)

ভাষা দিবস কত তারিখে ?

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি

ভাষা দিবস কে আর কী নামে অভিহিত করা হয়?

শহীদ দিবস   

ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদরা কারা ছিলেন?

আব্দুল সালাম, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবুল বারকত, আব্দুল জব্বার প্রমুখ।

কোন অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়?

ইউনেসকোর প্যারিস অধিবেশনে ।

ভাষা দিবস উদযাপন করার দিনে কোন গানটি খুব প্রাসঙ্গিক ?

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি”

শহীদ দিবস কবে ?

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি

Recent Posts