সমগ্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবার রয়েছে ভারতবর্ষে ।৩৯ জন স্ত্রী, ৯৪ ছেলেমেয়ে , ১৪ জন পুত্রবধূ এবং ৩৩ জন নাতি-নাতনি নিয়ে জমিয়ে সংসার করছেন ইম্ফল বাসী ৭৫ বছর বয়সী জিওনা চানা । গোটা দুনিয়ায় এত জন স্ত্রী কারোর নেই , তিনি এক বছরে ১০টি বিয়ে করে রেকর্ড গড়েছেন । সবথেকে আশ্চর্য হল এই যে তাঁর প্রত্যেক স্ত্রী এখনও তাঁর সঙ্গেই থাকেন।
ভারতের উত্তর পূর্বে এবং বাংলাদেশের লাগোয়া মিজোরামের এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয়েছিল জিওনার । ১৯৪৫ সালে যখন তাঁর বয়স মাত্র ১৭ বছর বয়স তখন প্রথমবার বিয়ে করেন তিনি। তবে একটা বিয়ে করেই তিনি থেমে থাকেন নি। এরপর বহুবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সবমিলিয়ে মোট ৩৯ জন নারীকে বিবাহ করেন তিনি। লন্ডন ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী পৃথিবীর সবথেকে বড় পরিবারের প্রধান হিসেবেও বিবেচিত করা হয়েছে জিওনা চানা কে । জিওনার পরিবারের মোট সদস্যসংখ্যা ১৮১ জন।
জানা গেছে , জিওনার বাড়িটি ও তাঁর সংসারের মতোই বিশালাকার । মিজোরামের বাক্তোয়াং গ্রামে অবস্থিত এই চারতলা বাড়িটিতে ঘরের সংখ্যা ১০০ যেখানে জিওনা চানা পরিবারের সকলকে নিয়ে একসাথে বসবাস করেন । বিশাল আকৃতির এই পরিবারে আছে পুরোপুরি সামরিক শৃঙ্খলা । তাঁর ঘরের পাশাপাশি রয়েছে তাঁর স্ত্রীদের ঘর। নিয়ম অনুযায়ী জিওনা যে মহিলাকে শেষে বিয়ে করেছেন তিনি থাকেন সবথেকে কাছের ঘরে আর যাকে সর্বপ্রথম বিয়ে করেছেন, তিনি থাকেন সব থেকে দূরের ঘরে।
তবে প্রত্যেক স্ত্রীর ই নিজের স্বামী ঘরে প্রবেশ করার পূর্ণ অনুমতি আছে।স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য অনুসারে পরিবারের কর্তা অর্থাৎ জিওনা চানা সবসময়ই চান সাত থেকে আটজন স্ত্রী সবসময়ই যেন তাঁর আশেপাশে থাকেন।
জিওনার বাড়িতে তাঁর সকল ছেলেরাই নিজেদের স্ত্রীদের নিয়ে থাকেন । তবে এই বিশাল পরিবারে সবার আলাদা ঘর উপস্থিত থাকলেও হেঁশেল অর্থাৎ রান্নাঘর কিন্তু একটাই। স্ত্রীরা থাকেন রান্নার দায়িত্বে; কন্যারা থাকে ঘর পরিষ্কারের দায়িত্বে এবং পরিবারের পুরুষেরা চাষবাস করেন কিংবা পশুপালনে ব্যস্ত থাকেন। নিজেদের আয় ছাড়াও অনুগতরাও অনেক ক্ষেত্রে পরিবারকে অনুদান দিয়ে থাকেন।
প্রত্যেক দিন খাবার জন্য এই পরিবারের ১০০ কেজি চাল আর ৭০ কেজির বেশি আলু রান্না করা হয়। যেদিন মাংস রান্না হয় সেদিন মোটামুটি ৬০ কেজি আলু এবং ৪০টি মুরগি লাগে গোটা পরিবারের উদরপূর্তির জন্য । বিশ্বের সর্বাধিক বড় পরিবারের কর্তা হয়ে জিওনা চানা খুব ই গর্বিত তবে তিনি এখানেই থামতে চান না ; আরও বাড়াতে চান তাঁর পরিবারের গণ্ডি, আরও বিয়ে করতে চান তিনি। জিওনা উদ্যোগ নিয়ে নিজের পরিবারের ছোট ছোট সদস্যদের জন্যও স্কুল বানিয়েছেন সেখানে তার ছেলেমেয়ে এবং নাতি-নাতনিরা পড়াশোনা করেছে এবং সেই স্কুলটি সরকারের কিছু অনুদান ও পেয়ে থাকে। আগেকার দিনের রাজা মহারাজদের মতন মিজোরাম বাসী জিওনাও তাঁর এতগুলি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি নিয়ে সুখে-শান্তিতে একসঙ্গে বাস করছেন।