মৌর্য সাম্রাজ্যের তৃতীয় সম্রাট অশোক ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্রাট হিসেবে বিবেচিত ।পিতা বিন্দুসারের মৃত্যু পরবর্তীকালে সম্রাট অশোক সিংহাসন আরোহণ করেন এবং দাক্ষিণাত্যের কিছু অংশ ছাড়া ভারতবর্ষের অধিকাংশ অঞ্চলই তাঁর সুবিশাল সাম্রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সম্রাট অশোকের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ এইসব অঞ্চলগুলিতে এবং দক্ষিণ এশিয়ার কিছু অংশগুলির সাংস্কৃতিক চেতনাকে গভীরভাবে অনুপ্রানিত করেছিল।
সিংহাসন আরহণ:
বিন্দুসারের সাতাশ বছর রাজত্বকালের পর এবং তাঁর মৃত্যু পরবর্তী সময়ে তাঁর পুত্রদের মধ্যে ‘অশোক’ ,”প্রিয়দর্শী” উপাধি নিয়ে খ্রিষ্টপূর্ব২৭৩ অব্দে মগধের সিংহাসনে বসেন ।তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর রাজ্য অভিষেক হয় চার বছর পরে অর্থাৎ খ্রিষ্টপূর্ব ২৬৯ অব্দে। ইতিহাসের বিস্ময় পৃথিবীর সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোক নাকি বাল্যকালে অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির ছিলেন ।সিংহলের “মহাবংশ” নামে পালি গ্রন্থে লেখা আছে অশোক তার অন্যান্য ভাইদের হত্যা করে সিংহাসনে বসে ছিলেন ।এই কারণে তাঁকে ‘চণ্ডাশোক’ ও বলা হয়ে থাকে ।
কলিঙ্গ বিজয় এবং প্রতিক্রিয়া :
রাজত্বের প্রথম দিকে অশোক তার পূর্বপুরুষদের অনুসৃত যুদ্ধ দ্বারা রাজ্য বিস্তারের নীতি অনুসরণ করেন। রাজ্য অভিষেকের আট বছর পর ওড়িশার বৈতরণী নদী থেকে গোদাবরি সন্নিহিত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত পরাক্রান্ত কলিঙ্গ রাজ্যটি তিনি আক্রমণ করেন এবং জয়লাভ ও করেন। তবে জয়লাভ করলেও যুদ্ধের পরিণতি অশোককে বিশেষ ভাবে ব্যথিত করেছিল। তার ত্রয়োদশ শিলালিপিতে অশোক উল্লেখ করে গেছেন যে সেই যুদ্ধে দেড় লক্ষ সৈন্য বন্দি হয়, এক লক্ষ্য সৈন্য নিহত হয় এবং এর বহুগুণ মানুষ মারা যায়। এই যুদ্ধে বহু নগরগ্রাম ছারখার হয়ে যায় ।যুদ্ধে, দুর্ভিক্ষে, মড়কে কলিঙ্গ শ্মশানে পরিণত হয় ।যুদ্ধের এই ভীষণ অভিশাপে সম্রাটের মনে দুঃখের প্লাবন বয়ে যায় ।জীবের দুঃখ একদিন যেমন গৌতমকে পরিণত করেছিল বুদ্ধে; তেমনি কলিঙ্গ যুদ্ধ ‘চণ্ডাশোক’ কে রূপান্তরিত করল ‘ধর্মাশোকে’ ।
বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা :
এ ঘটনার পরবর্তী কালে সুখে ,দুঃখে অনুতাপে এবং মনুষ্য জাতির প্রতি সমবেদনায় অশোক প্রতিজ্ঞা করলেন যে জীবনে আর কখনও যুদ্ধ করবেন না । বৌদ্ধ সন্ন্যাসী উপগুপ্তের কাছে তিনি বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন ।ললিত শান্তির ললিত বাণী তাঁর ব্যথিত , অনুতপ্ত হৃদয়কে শান্ত করল; দিগ্বিজয় পরিণত হলো ধর্ম বিজয়ে; রণভেরি পরিবর্তিত হলো ধর্মভেরিতে । যুদ্ধপ্রিয় রাজা পরিণত হল এক পরম মানবপ্রেমিকে ।শুরু হলো ধর্মপ্রচারের মধ্যে দিয়ে ‘এক ভারত ~ভাতৃত্ববোধ’ নীতির প্রচার ।
অশোকের সাম্রাজ্য :
মৌর্য সাম্রাজ্যের সীমা অশোকের রাজত্বকালেই সবথেকে বেশি প্রসারিত হয় । উত্তর পশ্চিমে তাঁর সাম্রাজ্যের সীমা তৎকালীন সিরিয়ার রাজার সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আফগানিস্তান, বেলুচিস্তান ও সিন্ধু দেশ তার সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল । উত্তরে নেপাল ও কাশ্মীর তাঁর সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল ।দূর দক্ষিণে চের, চোল, পাণ্ড্য ও পল্লব রাজ্যকে অশোককের শিলালিপিতে সাম্রাজ্যের বাইরে মিত্র রাজ্যব্যাপী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পূর্বদিকে অশোকের সাম্রাজ্য খুব সম্ভবত ব্রহ্মপুত্র নদ ও পশ্চিমে আরব সাগর ও সৌরাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
বৌদ্ধধর্ম প্রচার এবং অশোকের ধর্ম :
অশোক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা গ্রহণের পরে রাজর্ষি অশোক বুদ্ধের বাণী প্রচারের মধ্য দিয়ে জীবনের অধিকাংশ সময় অতিবাহিত করেন ।বৌদ্ধধর্মীয় মহান আদর্শ জগতে প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর জীবনের অন্যতম ব্রত। ফলে তাঁর এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পূর্ব ভারতে একটি আঞ্চলিক ধর্ম ধীরে ধীরে বিশ্ব ধর্মে পরিণত হয়েছিল ।
সাম্রাজ্যের মধ্যে ধর্মপ্রচার :
ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে অশোক বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন । তিনি’ধর্ম মহামাত্র” নামে এক শ্রেণির রাজকর্মচারী নিযুক্ত করেন এবং তাদের ওপর ধর্মপ্রচার ও জনকল্যাণমূলক কাজের ভার দেওয়া হয় । সাম্রাজ্যের নানা স্থানে, পাথরের স্তম্ভে ,পাহাড়ের গায়ে ধর্মের বাণীগুলো সাধারণের বোধগম্য প্রাকৃত ও ব্রাহ্মী ভাষায় উৎকীর্ণ করা হয়। এগুলিকে ধর্ম লিপি বলা হত। এ সব ধর্ম লিপি ছাড়াও অশোক শান্তি, মৈত্রী ও অহিংসার প্রতীক হিসেবে স্তূপ, স্তম্ভ এবং চক্র ইত্যাদি নির্মাণ করান। সাঁচি স্তূপ , সারনাথ ও অশোকস্তম্ভ তারই নিদর্শন। এছাড়া জনসাধারণের মনে ধর্মভাব জাগানোর জন্য অশোক একদিকে যেমন ধর্মোৎসব এবং অলৌকিক দৃশ্য দেখাবার ব্যবস্থা করেছিলেন ;অন্যদিকে তেমনি নিজেই প্রমোদ ভ্রমণের পরিবর্তে ধর্মপ্রচারে বের হন। এটি “ধর্ম যাত্রা” নামে পরিচিত ছিল । শুধু তাই নয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে মতবিরোধ দূর করার জন্য রাজধানী পাটলিপুত্রে অশোক তৃতীয় বৌদ্ধ সংগতির আহ্বান করেছিলেন ।
ধর্মপ্রচার সাম্রাজ্যের বাইরে:
শুধুমাত্র নিজের সাম্রাজ্যের মধ্যে ই নয় সাম্রাজ্যের বাইরে ও ভারতবর্ষে অন্যান্য রাজ্যে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে অশোক ধর্ম দূত পাঠিয়েছিলেন। তাই সুদূর দক্ষিণে চোল ,পাণ্ড্য , কেরলপুত্র ,সত্যপুত্র প্রভৃতি রাজ্য এবং উত্তরে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে তিনি ধর্ম দূত পাঠিয়েছিলেন ।
অশোকের ধর্ম :
অশোক ব্যক্তিগত জীবনে গোঁড়া বৌদ্ধ ছিলেন কিন্তু প্রজাসাধারণের কাছে তিনি যে উপদেশগুলি প্রচার করেন তা যে কেবলমাত্র বৌদ্ধধর্মের ই প্রচারপত্র ছিল তা বলা যায় না। সকল ধর্মের প্রতি উদার ও শ্রদ্ধাশীল অশোক সমস্ত ধর্মের মূল নীতিগুলোকেই গ্রহণ করেছিলেন এবং তার ধর্মের মূল কথা হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তাই অশোক প্রচারিত ধর্মে আর্যসত্য ,অষ্টাঙ্গিক মার্গ নির্বাণ লাভ প্রভৃতি বৌদ্ধধর্মের মূল লক্ষ্যে সুস্পষ্ট অনুপস্থিতি সত্ত্বেও সকল জীবের প্রতি দয়া, অহিংসা ,পরধর্মসহিষ্ণুতা ,সত্য কথা বলা নিজেকে সত্য রাখা, সৎ রাখা ,দান ,পিতামাতা গুরুজন এবং সাধু সজ্জনদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা ,নিষ্ঠুর আমোদ প্রমোদ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি প্রধান আচরণবিধি হিসেবে গৃহীত হয়েছিল। অর্থাৎ ইহজগতের সঙ্গে সঙ্গে প্রজাদের পারলৌকিক উন্নতি বিধান ছিল অশোকের ধর্মের মূল লক্ষ্য ।অশোক নিজেকে “দেবানমপ্রিয় প্রিয়দর্শী ” হিসেবে অর্থাৎ দেবতাদের প্রিয় রাজা ‘প্রিয়দর্শী’ হিসেবেই পরিচয় দিতেন। বৌদ্ধধর্মের তত্ত্ব কথার ওপর গুরুত্ব না দিয়ে সমস্ত ধর্মের মধ্যে যে অন্তর্নিহিত নীতিবোধ আছে সেই নীতিবোধকে জাগ্রত করাই ছিল তাঁর ধর্মের উদ্দেশ্য; এক কথায় তাঁর ধর্ম ছিল মানবতার প্রতি আবেদন সারা বিশ্ব জনে।
জনহিতকর কাজ :
শুধু ধর্মীয় ব্যাপারেই নয় জীবজগতের সার্বিক কল্যাণ সাধনেও অশোকের দৃষ্টি ছিল প্রখর ।সর্বজীবে দয়া ,অহিংসার যে বাণী তিনি প্রচার করেছিলেন তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য তিনি অক্লান্ত প্রচেষ্টা করেছিলেন। যাগ যজ্ঞে এবং রাজপরিবারে আহারের জন্য পশুবধ তিনি বন্ধ করেন ।শুধু মানুষের জন্যই নয় জীবজন্তুর চিকিৎসা র জন্যেও তিনি দেশময় দাতব্য চিকিৎসা লয় স্থাপন করেন । প্রয়োজনীয় ওষুধ যাতে সহজলভ্য হয় সেজন্য তিনি সহজলভ্য নয় এমন সব গাছপালা সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে চাষাবাদের ব্যবস্থাও করেছিলেন ।পথিকদের সুবিধার জন্য রাজপথ নির্মাণ করে তার দুই পাশে গাছপালা রোপণ করেছিলেন । কূপ ও দীঘি খনন করিয়েছিলেন,বিশ্রামাগার ও পান্থশালা ইত্যাদি নির্মাণ করিয়েছিলেন। দীন দুঃখীদের ভিক্ষা দানের ব্যবস্থাও করেছিলেন ;আর এই সমস্ত কাজে যথাযথ দৃষ্টি রাখার জন্য বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের নিযুক্ত করেছিলেন ।
বহির ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক , ধর্ম বিজয় :
রাজর্ষি অশোক কেবলমাত্র ভারতবর্ষের মধ্যেই ধর্মপ্রচার করে ক্ষান্ত হননি ;বিদেশেও তিনি ধর্মপ্রচারে উদ্যোগী হন । এই উদ্দেশ্যে সিংহল, ব্রহ্মদেশ ,সুমাত্রা প্রভৃতি দেশে ধর্ম দূত তিনি পাঠিয়েছিলেন। সিংহলে অশোকের পুত্র মতান্তরে তাঁর ভাই মহেন্দ্র এবং কন্যা সংঘমিত্রাকে এবং মধ্য এশিয়ায় পুত্র কুণালকে ধর্মপ্রচারের জন্য পাঠান । সে সময় সিঙ্গল রাজ সিঙ্গল বাসীদের বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হতে বিশেষ ভাবে প্রচেষ্টা নেন। শোন ও উত্তর নামে দুজন দূতকে অশোক ব্রহ্মদেশে পাঠিয়ে ফেলেন । এছাড়াও অশোক সিরিয়ার রাজা ,মিশরের রাজা, মেসিডনের রাজা, এপিরাসের রাজাএবং উত্তর আফ্রিকার অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রিক রাজন্যবর্গের রাজসভায় ধর্ম দূত এবং প্রচারক পাঠিয়েছিলেন।
বিদেশে ধর্ম প্রচারের এ ব্যবস্থাকে অশোক নাম দিয়েছিলেন ‘ধর্ম বিজয়’। এর ফলে শুধু ধর্মীয় যোগাযোগই নয় ,ওই সব দেশের সঙ্গে ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিকটতর হয়েছিল । এইভাবে অশোকের অক্লান্ত চেষ্টা ও কর্মকুশলতার জন্য একটি ক্ষুদ্র ধর্ম সম্প্রদায় পৃথিবীর বিশালতম ধর্ম সঙ্ঘে রূপান্তরিত হয় । বুদ্ধদেব যে সকল ধর্মমত শুধু মগধ ও তার নিকটবর্তী স্থানে প্রচারিত করেছিলেন তা কেবলমাত্র প্রচারক হিসেবে অশোক তাকে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধর্মে পরিণত করেন ।
বিশ্ব ইতিহাসে অশোকের স্থান :
মানবতা ,পরধর্ম সহিষ্ণুতা, জন্য কল্যাণকর শাসন যদি রাজা- মহারাজা দের মাহাত্ম্য ও খ্যাতির মাপকাঠি হয় তাহলে ইতিহাসে মৌর্য সম্রাট অশোকের স্থান যে সর্বোচ্চ সে বিষয়ে কোনো দ্বিমতের অবকাশ থাকে না । শত সহস্র রাজার ভিড়েও তিনি সেখানে উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক । হত্যা ও ধ্বংসের মাধ্যমে রাজ্য বিজয় অপেক্ষা মৈত্রী ও প্রেমের মাধ্যমে মানুষকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করা ছিল তাঁর কাজ ।এই উপলব্ধি দিগ্বিজয়ী সম্রাট অশোককে ধর্ম বিজয়ের মধ্যে দিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাটে রূপান্তরিত করে। তিনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে সমানভাবে শ্রদ্ধা করতেন ।
তাঁর এই উদারতা ,সহিষ্ণুতা, রাজা অশোককে ঋষিত্ব দান করেছিল তাই নানা জনহিতকর কাজের মধ্য দিয়ে সমস্ত প্রজার কেবলমাত্র জাগতিক সুখ সমৃদ্ধি ই নয় ,তাদের পার্থিব জীবনে শান্তির জন্য সম্রাট অশোক সচেষ্ট ছিলেন।
এই মানবিক প্রচেষ্টাই অশোককে বিশ্ব পিতৃত্বের আসনে বসিয়েছে । বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে তিনি মন প্রাণ দিয়ে শ্রদ্ধা করতেন এবং ভালোবাসার কথা বলেছেন । কলিঙ্গ শিলানুশাসনে তিনি উল্লেখ করেছেন যে পৃথিবীর সকলেই তাঁর সন্তান। এমন উদার অভিব্যক্তি পৃথিবীর আর কোনো সম্রাট করেছিলেন কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। সম্রাট হিসেবে অশোকের এ এক অবিস্মরণীয় কৃতিত্ব । তিনি সিংহল , আফ্রিকা মধ্য ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন রাজন্যবর্গের কাছে ধর্ম দূত প্রেরণ করে বুদ্ধের অমৃতবাণী পৌঁছে দিয়ে বিশ্ব শান্তিকে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন । তিনি চেয়েছিলেন সারা বিশ্বে যুদ্ধ হানাহানি বন্ধ হোক ;স্থাপিত হোক শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গলময় জীবন।এর মধ্য দিয়েই মানুষ নিজেকে প্রস্তুত করুক মহামুক্তির উপযোগী হিসেবে । অশোক ছিলেন যথার্থই মহামতি; মানবজাতির প্রথম ধর্মগুরু । কেবল মানুষই নয় পশুপাখির চিকিৎসা ও মঙ্গল সাধনেও অশোক ব্রতী হন আর তাঁর এই প্রচেষ্টায় তিনিই ছিলেন বিশ্বের প্রথম নরপতি । এই মহত্ত্ব বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় অশোককে এক অসাধারণত্ব দান করেছে ।
সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের নীতি অনুসরণ করে জনকল্যাণকর শাসনের মধ্যে দিয়ে মানবতার যে বাণী অশোক প্রচার করে গেছেন ভারতীয় সংস্কৃতি হল তাঁরই মূল বাহক। মানুষও শাসক হিসেবে তাঁর তুলনা করা চলে না তাতাই একথা বলতে অত্যুক্তি হয় না যে বিশ্বে শান্তির অগ্রদূত রাজর্ষি অশোক কেবলমাত্র ভারতেই নয় সারা বিশ্বের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রাট ।
FAQ ( সম্ভাব্য প্রশ্নাবলি )
সম্রাট অশোকের রাজ্যাভিষেক কবে হয়েছিল ?
উত্তর:- ২৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্রাট অশোকের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল ।
সম্রাট অশোকের রজত্বকাল কত সাল পর্যন্ত ব্যাপ্ত ছিল ?
সম্রাট অশোকের রজত্বকাল ২৭৩ – ২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ব্যাপ্ত ছিল ।
'দেবানাং প্রিয়' উপাধি কে ধারণ করেন ?
উত্তর:- মৌর্যসম্রাট অশোক ‘দেবানাং প্রিয়’ উপাধি ধারণ করেন ।
'দেবানাং প্রিয়' শব্দের অর্থ কী ?
‘দেবানাং প্রিয়’ শব্দের অর্থ হল দেবতাদের প্রিয় ।
সম্রাট অশোকের কোন পুত্র ও কন্যা সিংহলে ধর্ম প্রচার করতে গিয়েছিলেন ?
উত্তর:- সম্রাট অশোকের পুত্র মহেন্দ্র ও কন্যা সংঘমিত্রা সিংহলে ধর্ম প্রচার করতে গিয়েছিলেন।