বেঙ্গালুরু ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধান যা “ভারতের সিলিকন ভ্যালি” নামে পরিচিত। ব্যাঙ্গালোর দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে সমুদ্র সমতল থেকে ৯০০ মিটার(৩,০০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত।
এটি মহীশূর মাভূমি অঞ্চলের অর্ন্তগত।এই শহরের আয়তন প্রায় ৭৪১ বর্গ কিলোমিটার (২৮৬ বর্গ মাইল)। ব্যাঙ্গালোর ব্যাঙ্গালোরে দর্শনীয় স্থানের অভাব নেই। চারিদিকে সুন্দর স্থাপত্য ভাস্কর্যের পাশাপাশি বহু বাগান, রাজপ্রাসাদ, বহু মন্দির রয়েছে।
ব্যাঙ্গালোরের সৌন্দর্যকে তুলে ধরে এমন অন্যতম ২১ টি দর্শনীয় স্থান হল –
- লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেন
- মহীশূর রাজপ্রাসাদ
- কুব্বন পার্ক
- বিধানসভা ভবন
- চামুন্ডেশ্বরী মন্দির
- ওয়েন্ডার লা
- গ্রীষ্ম প্রাসাদ
- চেন্নাকেশব মন্দির
- নন্দী পাহাড়
- শ্রীরঙ্গপত্তনম দুর্গ
- রঙ্গনথিট্টো পক্ষীআলয়
- বিশ্বেশ্বরায়া মিউজিয়াম
- সোমনাথ মন্দির
- শিভগঙ্গা হিল
- জনকল্যাণ জাদুঘর
- মাধুগরি হিল
- শিবসনমূদ্র জলপ্রপাত
- লম্বিনি গার্ডেন
- ব্যানারুঘট্ট জাতীয় উদ্যান
- সাভান্দুর্গা হিল
- মুথিয়ালুমডুউউ
বেঙ্গালুরুতে বেড়ানোর জায়গা
লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেন
ব্যাঙ্গালুরু শহরের মালাভিতে অবস্থিত বিখ্যাত লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেন ১৭৫৬ সালে তৎকালীন মহীশূর রাজ্যের মহারাজা হায়দার আলী এটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তী সময়ে এর কাজ সমাপ্ত করেন মহারাজা টিপু সুলতান। ২৪০ একর জায়গার ওপর লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেন নির্মিত, এর চারিদিকে শুধু সবুজ। পুরো বোটানিক্যাল গার্ডেনে অসংখ্য রাস্তা। গার্ডেন জুড়ে হাজার প্রজাতির ফুল, ফল ও কাঠের গাছ আছে। বোটানিক্যাল গার্ডেন পাখিদের অভয়ারণ্য হওয়ার কারণে অসংখ্য পাখি দেখা য়ায়। বোটানিক্যাল গার্ডেনজুড়ে আছে শত শত শিল্পকর্ম। লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেনে একটি দৃষ্টিনন্দন গ্লাস হাউজ আছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ দেখত পাওয়া যায় । লালবাগ বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে বিশাল এরিয়া নিয়ে বনসাই গার্ডেন তৈরি করা হয়েছে।
মহীশূর রাজপ্রাসাদ
মহীশূর রাজপ্রাসাদ শহরের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ। দর্শনীর স্থাপত্য, ইন্দোসেরাসেনিক শৈলীর। অন্দরমহলে নানা স্মারক সংগৃহীত। উৎসব ও ছুটির দিনে এবং দশেরার সময় সমস্ত প্রাসাদটিকে আলোকমালায় সাজানো হয়। ৪৮ মিটার উঁচু ইন্দো সেরাসেনিক শৈলির এই প্রাসাদ অন্যতম পর্যটন স্থান ।
কুব্বন পার্ক
পার্কের প্রধানত সবুজ অঞ্চলে অনেকগুলি গতিময় রাস্তা রয়েছে এবং পার্কের মধ্যে সাজানো হাঁটার পথগুলি। ৩০০ একরের সুন্দর কুব্বন পার্ক ১৮৬৪ সালে নির্মিত হয়।
বিধানসভা ভবন
অসাধারণ স্থাপত্যের উদাহরণ বিধানসভা ভবনের অপূর্ব সৌধটি কুব্বন পার্কের কাছেই অবস্থিত।
চামুন্ডেশ্বরী মন্দির
মাইসোরে অবস্থিত চামুন্ডী পাহাড়ের কোলে ১০৯৫ মিটার উচ্চতায় চামুন্ডেশ্বরী মন্দির৷ মন্দিরের নিম্নে বিশাল এক মহিষাসুরের মূর্তি৷ রংচঙে মূর্তিটির এক হাতে তরবারি আর অন্য হাতে বিশাল কেওটে সাপ। দেবী চামুন্ডেশরী এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিতা দেবী। চামুন্ডেশ্বরীর নাম অনুসারেই এই পাহাড়ের নাম।
ওয়েন্ডার লা
চিত্তবিনোদন পার্ক, ব্যাঙ্গালোর থেকে 40 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, মাইসোর রোডের উপর।৮২ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত পার্কটি ২০০৫ সালের অক্ট অক্টোবরে চালু হয় পার্কটি।
গ্রীষ্ম প্রাসাদ
সুলতানি আমলের জিনিস দেখার জন্য জনপ্রিয় পর্যটন স্থান গ্রীষ্ম মন্দির। সিটি মার্কটের কাছাকাছি যে দুর্গের অবশেষ রয়েছে তা ছিল টিপু সুলতানের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ। এই সুবিশাল প্রাসাদ দেখতে অত্যন্ত চমৎকার। এখানে একটি যাদুঘর রয়েছে যেখানে টিপু সুলতান ও হাইদার আলীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র রয়েছে।
চেন্নাকেশব মন্দির
চেন্নাকেশব মন্দির এর নির্মাণ শুরু হয় 1116 খ্রিস্টাব্দে। ১০৩ বছর ধরে সেই নির্মাণযজ্ঞ চলে। বেলুড়ের মূল আকর্ষণ এই মন্দির অসামান্য স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন এর পাশাপাশি পৌরাণিক নানা আখ্যানের সাথে দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে মন্দিরে। ব্যাঙ্গালোরে দর্শনীয় স্থান গুলির মধ্যে অন্যতম এই মন্দির।
নন্দী পাহাড়
ব্যাঙ্গালোর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নন্দী পাহাড় একটি উদ্ভট পাহাড় দুর্গ।একটি ৬০০ মিটার উচ্চ পর্বত মুখ, সুন্দর ভূদৃশ্য একটি চমত্কার প্যানরোমিক দৃশ্য উপলব্ধ করা যায়, অপূর্ব সুন্দর নন্দী পাহাড় ব্যাঙ্গালোরের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় গন্তব্যস্থান।
শ্রীরঙ্গপত্তনম দুর্গ
এই দুর্গের সঙ্গে টিপু সুলতানের নামও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে এখানেই প্রাণ হারান টিপু সুলতান, দুর্গের আশপাশে রয়েছে হায়দর আলির সমা শ্রীরঙ্গনাথস্বামীর মন্দির, দৌলতাবাদ, জুম্মা মসজিদ।
রঙ্গনথিট্টো পক্ষীআলয়
শ্রীরঙ্গপট্টম থেকে ৪ কিম দূরে পাখি প্রেমীদের জন্য দর্শনীয় স্থান রঙ্গনথিট্টো পক্ষীআলয়, বিভিন্ন ধরনের পাখির কলতানে মুগ্ধ হতে অবশ্যই আসতে হবে এখানে।
বিশ্বেশ্বরায়া মিউজিয়াম
জাতীয় বিজ্ঞান বিষয়ক শিল্প ও প্রযুক্তির এই জাদুঘর 43,000 বর্গফুট আয়তনের, এই বিল্ডিংটি কিব্বন পার্কে নির্মিত হয়েছিল। এটিতে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা এবং ইঞ্জিন রয়েছে এবং এটি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু উদ্বোধন করেছিলেন সালের ১৯৬২সালের ১৪ জুলাই। ভিআইটিএম-এ স্থাপিত প্রথম গ্যালারী, ‘বিদ্যুৎ’ বিষয়ক থিমটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল ২৭ জুলাই ১৯৬৫
সোমনাথ মন্দির
১২৬০ খৃস্টাব্দে নির্মিত হয় মহীশুর থেকে ৪০ কি.মি. দুরে অবস্থিত বিখ্যাত তারকা আকৃতির এই মন্দির হোইসালা স্থাপত্যের মহত্ব প্রকাশ করছে। প্রতি বছরের হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে এই তীর্থ স্থান ভ্রমণের জন্য।
শিভগঙ্গা হিল
ব্যাঙ্গালোর থেকে 50 কিমি উচ্চতায় শিবগাং পাহাড়। পাহাড়ের পাদদেশে দুটি শিব মন্দির নির্মিত – শিবগঙ্গা ও গভি গঙ্গাধেশ্বর। এই পাহাড়ের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এটি পূর্ব থেকে একটি বাষ্প, পশ্চিম থেকে গণেশ, দক্ষিণ থেকে লিঙ্গ এবং উত্তর থেকে একটি কোবরা। শিবগাং মন্দিরের কাছে পাহাড়ের নীচে একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গ রয়েছে।
জনকল্যাণ জাদুঘর
ব্যাঙ্গালোরের রামনগরমে লোক শিল্পের ইতিহাস যাদুঘরে মাস্ক, আর্টিফেক্টস, পোশাক, লোক সঙ্গীত এবং লোক নৃত্যের ভিডিও আছে। যাদুঘরের প্রধান আকর্ষণ ছিল বিশাল মন্দিরের রথ। যাদুঘরের একটি আশ্চর্যজনক অ্যাম্ফিথিয়েটারও রয়েছে এবং যাদুঘরের পিছনে একটি নৌকো কমপ্লেক্স সহ একটি হ্রদ রয়েছে। যাদুঘরের সকল জিনিস লোকমহল, লোকমথা মন্দির এবং চিত্রকুত্যুর এই তিনটি ভবনে রাখা হয়। লোকমথ মন্দিরের বিভিন্ন ধরনের ঝুড়ি, পাত্র এবং মাটির ক্যান রয়েছে। চিত্রকোটারে বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফ উপস্থাপিত যা জনপ্রিয় জীবনের বিভিন্ন দিককে আচ্ছাদন করে।
মাধুগরি হিল
বেঙ্গালুরু থেকে 106 কিলোমিটার দূরে, মধুগিরি শহরে, 1197 মিটার উচ্চতায়, সাভান্দুর্গার পরে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম একতরফা পাথুরে পাহাড়। পাহাড়ের পাশেই একটি দুর্গ রয়েছে এবং পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে গোপালকৃষ্ণ মন্দির। দুর্গ এবং মন্দির উভয় ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় রয়েছে।
শিবনাসমদ্রাম জলপ্রপাত
বেঙ্গালুরু শহর থেকে ১৩০ কিমি দূরে রাজ্যের অন্যতম সেরা জলপ্রপাত – শিবনসমুদ্র, শিবনসমুদ্র দ্বীপটি কাভেরি নদীকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে, যা দুটি জলপ্রপাত গঠন করে, একটি গগনাচুক্কি এবং অন্যটি ভরাচুকি। ভরচুক্কি গাগানাচুকি থেকে প্রায় 130 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। জলপ্রপাত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে এশিয়ার প্রথম শিবনসামুদ্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র
লম্বিনি গার্ডেন
শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় উচ্চ প্রযুক্তির কিন্ডারগাটেন সমন্বিত লম্বিনি গার্ডেন হিবাল ওভারপাসের বাইরের রিং সড়কে অবস্থিত নাগাওয়ারা লেক থেকে ব্যাঙ্গালোর রেলওয়ে স্টেশন থেকে 11 কিমি অবস্থিত।পার্কে নৌকায় চডা, সাঁতার কাটার পাশাপাশি বাঙ্গি জাম্পিং এর ব্যবস্থা রয়েছে।
ব্যানারুঘট্ট জাতীয় উদ্যান
ভারতের অন্যতম সেরা ওপেন এয়ার চিড়িয়াখানা। ব্যানারুঘট্ট জাতীয় উদ্যান।বেঙ্গালুরু রেলস্টেশন থেকে 23 কিলোমিটার দূরে ব্যানারঘাট্টার বিখ্যাত বন্যজীবন পার্ক। 1971 সালে প্রতিষ্ঠিত এই পার্কটি ২৫ হাজার একর অঞ্চলে, একটি চিড়িয়াখানা, একটি শিশু উদ্যান, একটি অ্যাকোয়ারিয়াম, একটি কুমির পার্ক, একটি যাদুঘর, একটি প্রজাপতি পার্ক, একটি সাপ পার্ক এবং একটি সাফারি পার্ক নিয়ে গঠিত। এই পার্কে বাঘ, সিংহ, হাতি, চিতা, বাইসন, হরিণ, ভাল্লুক, পাখি এবং প্রজাপতি বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও রয়েছে।
সাভান্দুর্গা হিল
এশিয়ার বৃহত্তম একচেটিয়া পাহাড় হিসাবে বিবেচিত সাভান্দুর্গা হিল অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য অন্যতম ভ্রমণ স্থান। ট্রেকিং একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ক্রিয়াকলাপ। এখানে দুটি প্রধান চলার রুট তৈরি করা হয়েছে: একটি হ’ল করিগুদ্দা এবং অন্যটি বিলিগুদ্দা। সাভান্দুর্গে ট্রেকিং অত্যন্ত জনপ্রিয়।
মুথিয়ালুমডুউউ
বেঙ্গালুরু থেকে 40 কিলোমিটার দূরে আশ্চর্যজনক জলপ্রপাত মুথিয়ালুমডুউউ। এটি বিখ্যাত পিকনিক স্পট যা পার্ল ভ্যালি নামে পরিচিত।
আশা করি এই পোস্টটি থেকে আপনারা যথেষ্ট তথ্য পেয়েছেন। এগুলি ছাড়াও কোনো রকম তথ্যের দরকার হলে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে কমেন্ট করুন।
Recommended Read,
কলকাতার দর্শনীয় স্থানগুলি
বেঙ্গালুরু নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর
দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে
কন্নড়
সমতল থেকে বেশ উঁচুতে অবস্থিত ব্যাঙ্গালুরুর আবহাওয়া বেশ মনোরম থাকা সারা বছর ধরে। গ্রীষ্মকালে বেশি গরম হয়না নাই শীতকালে বিশাল হাড়কাঁপানো ঠান্ডা।
ইস্কন মন্দির,
বানেরঘাটা চিড়িয়াখানা,
ক্যাবন পার্ক,
নন্দী পাহাড়,
মাইশোর প্রাসাদ