অতি সাধারণ নারীর মধ্যেও থাকে প্রবল শক্তি, তাই তো শিশু কোলে নিয়েও হেঁটে গেছে মাইলের পর মাইল, ফিরেছে বাড়ি। করোনা অতিমারির জেরে কয়েক মাস আগে হয়েছিল লকডাউন, দীর্ঘ পথ হেঁটে সন্তানদের কোলে নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন মা৷ লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের এই চিত্র আমাদের সকলেরই পরিচিত। বর্তমানে নিউ নর্ম্যালে সব কিছু স্বাভাবিক হচ্ছে।পরিযায়ী শ্রমিক মায়েদের সম্মান জানিয়ে সব মা’ই যে মা দুর্গার রুপ এই ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলছে কলকাতার একটি নামী পুজো কমিটি। বেহালার বড়িশা ক্লাবের পুজো মণ্ডপে এবার মা দুর্গা পরিযায়ী শ্রমিকের বেশে, মা দুর্গার সাথে আছেন লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতীও৷
পরিযায়ী শ্রমিকের রূপে মা দুর্গা তাঁর সন্তানদের নিয়ে ত্রাণের খোঁজে, সেই ভাবনাই বড়িশা ক্লাব তুলে ধরেছে৷করোনা আবহে দেশের প্রায় চার কোটি পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্য ১.০৫ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক করোনা অতিমারি ও লকডাউনের জন্য কাজ হারিয়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরে যায়। সাধারণ গ্রাম্য নারীর মধ্যেও দশভুজার শক্তি থাকে, সেই শক্তিকেই এবার অন্য মাত্রা দিয়েছে প্রতিমার এই ‘থিম’।
শিল্পী রিন্টু দাস ‘ দ্য টেলিগ্রাফ’ সংবাদপত্রকে বলেছেন যে মা প্রখর রোদ, খিদে, কষ্টকে সাথে নিয়েও সন্তানের জন্য খাবার, ত্রাণ খোঁজেন,সেই মাতৃ মূর্তিকেই মা দুর্গার মূর্তিতে রূপ দেওয়া হয়েছে।
বাস্তবের ‘দুর্গা’কে অনেক অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হয়, লকডাউনের সময় বহু স্থানে শুধু মাত্র কাজ হারানোই নয়, গার্হস্থ্য হিংসার বহু ঘটনা উঠে আসে। নারী শক্তির জাগরণ অবশ্যই জরুরি, অতি সাধারণ নারীর মধ্যেও যে দেবীশক্তি নিহিত থাকে , সেই রূপকেই তুলে ধরেছে এই ক্লাবের পুজো। বাস্তবের এই দুর্গা প্রতিমার অঙ্গের রূপ তাই গৌরবর্ণ না করে মৃত্তিকার রঙে করা হয়েছে।