ভারতীয় নাগরিকদের পর এবার গরুদেরও পরিচয়পত্র বিতরণ করা হল; আধার কার্ড হিসেবে। অভিনব এই সরকারি উদ্যোগ এক বিরল দৃষ্টান্ত ।
আপামর জনতার সুবিধার্থে ভারত সরকার আঠারো বছর এবং তার ঊর্ধ্ব ভারতীয় নাগরিকদের জন্য প্রদান করেছে ভোটার পরিচয়পত্র পরবর্তীকালে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করে রাখার উদ্দেশ্য নিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেক নাগরিককে আধার কার্ড প্রদান করার রীতি চালু করেছে।
ভারত সরকার দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি প্রাণিকুলের হিসাব রাখার ও এক মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্দেশ্যে প্রথম পর্যায়ে গরুর জন্য চালু করা হয়েছে ডিজিটাল পদ্ধতির কার্ড বা ট্যাগ যাতে দেশের সব গরুর হিসাব রাখা যায়। ভারত সরকারের এই অভিনব উদ্যোগটিকে অনেকেই গরুর আধার কার্ড প্রদানের একটি প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করছেন। এই অভিনব উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করার জন্য ও দেশের সব গরুর হিসাব রাখার জন্য বার কোডসহ একটি ট্যাগ দেওয়া হয়েছে যেটি প্রত্যেকটি গরুর কানে লাগানো হয়েছে।পূর্বে গরুর হিসাব রাখার জন্য ট্যাগ লাগানো হলেও তা ছিলনা ডিজিটাল পদ্ধতি সমৃদ্ধ।
বর্তমানকালে এই ট্যাগকে সর্বাধুনিক ভাবে প্রস্তুত করে তা নতুনভাবে গরুদের উদ্দেশ্যে বিতরণ করা হচ্ছে । তাই একে অনেকে গরুর আধার কার্ড হিসেবে প্রচার করে থাকেন।মোদি সরকারের অভিনব এই উদ্যোগকে গ্রহণ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাণী বিকাশ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বিবরণ অনুযায়ী , কৃত্রিম প্রজননের জন্য যেসব গরু চিহ্নিত করা হয়ে থাকে, তাদেরকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেওয়া হয়ে থাকে এই ট্যাগ।কৃত্রিম প্রজনন সম্পন্ন হবার পর গরুর কান ফুটিয়ে লাগানো হচ্ছে এই ডিজিটাল হলুদ রঙের বিশেষ ধরনের ট্যাগ।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর জানিয়েছেন যে রাজ্যে ছয় হাজারের বেশি গো-প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে যেখানে গো ~পালকেরা গরু নিয়ে আসেন প্রজননের জন্য এবং এই বিশেষ কাজটিতে নিয়োগ করা হয়েছে রাজ্যের ৩৪৪টি ইউনিয়নের ৩ হাজার ৫৩৬ জন কর্মী বা যারা গরুর প্রজনন কাজে সহায়তা করে চলেছেন।
- শিউলি ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত, Details about Shiuli flower
- পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত, Best details about the Battle of Plassey in Bengali
- পণপ্রথা একটি জাতীয় সমস্যা, Best essay on the Dowry System in Bengali
- বিয়েতে যৌতুক হিসেবে ২১ টি বিষধর সাপ 🐍 !! 21 Snakes as Wedding Gift – Bangla Viral News
- অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এই বিশেষ গাছটিতেই পাণ্ডবেরা লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁদের অস্ত্র সরঞ্জাম!! Pandavas Hid Their Weapons in This Tree
২০১৬-১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের কৃত্রিম প্রজনন হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ১৪৮টি গরুর আর তাদের মধ্যে বাচ্চা হয় ৭০ হাজার ২১১টি গরুর।
এই বার কোডের মধ্যে দিয়ে সেই নির্দিষ্ট গরুর সার্বিক তথ্য চলে যাচ্ছে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সার্ভারে। পূর্বে কৃত্রিম প্রজননের দেখভাল ও পর্যবেক্ষণ সেইভাবে হতো না । বার কোড ব্যবহার করার মধ্যে দিয়ে গরুগুলিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে তাদের ভালোভাবে খেয়াল রাখাও যাচ্ছে। বার কোডে দেওয়া নম্বর থেকে গরুগুলিকে চিহ্নিত করার ফলে দেশে কত সংখ্যক গরু আছে, তার পরিসংখ্যান রাখা সম্ভব হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে দুধের উৎপাদন কী পরিমাণে হচ্ছে তাও জানা যাচ্ছে।
এই বিশেষ ধরনের হলুদ ট্যাগ এ একটি অত্যাধুনিক রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডি চিপ লাগানো থাকছে আর এই চিপের সাহায্যে গরুর বয়স, ওজন, প্রজাতি, কতটা পরিমাণ তারা দুধ দিচ্ছে, টিকা দেওয়ার সময়, লোকেশন অর্থাৎ গরু কোথায় রয়েছে সব কিছুই জানা সম্ভব হচ্ছে ।এই চিপে গরুর বিস্তারিত বিবরণের পাশাপাশি রয়েছে গরুর মালিকের ও যাবতীয় তথ্য যেমন মালিকের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি । ভিন রাজ্যে গরু পাচার হচ্ছে কিনা, গরুর টিকা করণ সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে এই আধার কার্ড থেকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ই-গোপালা অ্যাপ্লিকেশনটি প্রচলন করার সময় পশু আধার কার্ড সম্পর্কে উল্লেখ করে বলেন অন্যান্য সব সুবিধার সাথে সাথে আধার কার্ড প্রচলনের ফলে পশু কেনা বেচা ও সহজ হয়ে উঠবে আর এর সাহায্যে গবাদি পশুপালকরা সফটওয়্যারটির মাধ্যমে ঘরে বসে তাদের পালিত পশু সম্পর্কে তথ্য পেতে সক্ষম হবেন অতি সহজেই।
প্রত্যেকটি আধার কার্ডের খরচ পড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। গবাদিপশুর এই কার্ডের নাম রাখা হয়েছে ‘পশু সঞ্জীবনী’। দেশে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ গরু-মোষের কানে এরই মধ্যে হলুদ ট্যাগ লাগানোর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৬৬ লক্ষ গরু ও ৬৭ লক্ষ মহিষের ট্যাগে চিপ ভরাও হয়ে গেছে। সংবাদ সূত্রে জানা গেছে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৪ কোটি গরু ও মহিষের আধার কার্ড প্রস্তুত করা হয়েছে। ভারতবর্ষের মতো সুবিশাল দেশে ৩০ কোটিরও বেশি গরু রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরও ট্যাগিং নম্বর দেওয়া হবে । পরবর্তী সময় ভেড়া, ছাগল ইত্যাদি প্রাণীর নম্বর ও তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে ।