জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অভিজ্ঞ নেতা এবং স্বাধীনভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু । তিনি ছিলেন এক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কূটনীতিবিদ যিনি ,’জাতির জনক” মহাত্মা গান্ধীর তত্ত্বাবধানে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
জওহরলাল নেহরু ছিলেন একজন আদর্শবাদী ব্যক্তিত্ব যিনি একাধারে পণ্ডিত, দক্ষ লেখক ও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন এক নেতা। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট, ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা দিবসে দেশের জাতীয় পতাকাটি উত্তোলন করেছিলেন।
শৈশবকাল এবং শিক্ষা
১৪ই নভেম্বর, ১৮৮৯ তারিখটি ভারতের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন কারণ সেই দিন এলাহাবাদ শহরে ,গঙ্গা নদীর তীরে জওহরলাল নেহেরু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পিতা, মতিলাল নেহরু ছিলেন একজন নামকরা আইনজ্ঞ যিনি আইন ব্যবসার কারণে এলাহাবাদে বসবাস শুরু করেন এবং ঠিক একই সময় তিনি কংগ্রেসের রাজনীতিতে এক সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকেন।
জওহরলাল নেহরু, “আনন্দ ভবন” নামক বিশাল বাড়িতে মা সরুপা দেবী এবং তাঁর দুই বোন বিজয়া লক্ষ্মী ও কৃষ্ণা কে নিয়ে বসবাস করতেন। তিনি এবং তাঁর দুই বোন পাশ্চাত্য সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে গড়ে ওঠেন। সেই সময়কার ভারতের সবথেকে আধুনিক স্কুলে নেহেরু অধ্যয়ন করেছিলেন । এর পর প্রায় ১৫ বছর বয়সে নেহেরু ইংল্যান্ডের হ্যারোতে চলে যান যেটি ছিল অত্যন্ত নামকরা একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। সেখানে তিনি দু বছর অতিবাহিত করেছিলেন।জওহরলাল নেহরুর শিক্ষাজীবন ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ।
হ্যারো থেকে তিনি দু বছর পর প্রকৃতি বিজ্ঞান নিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি কেমব্রিজে ব্যারিস্টারি নিয়ে অধ্যয়ন করা শুরু করেন। ইংল্যান্ডে পড়ারকালীন নেহেরু ভারতীয় ছাত্র সংসদের রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে যোগদান করেছিলেন এবং ক্রমে তিনি সমাজতন্ত্রের প্রতি আকৃষ্ট হন এই সময়ে কাল থেকে। ১৯১২ সালে দেশে ফিরেই তিনি সরাসরি রাজনীতির সংস্পর্শে চলে আসেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই বিদেশী ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্তির লক্ষ্য ছিল তাঁর উদ্দেশ্য।
বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস তাঁকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছিল। আয়ারল্যান্ডের বিখ্যাত সিন ফিন আন্দোলনের বিষয়ে জানতে তিনি খুবই উৎসাহী হয়ে ওঠেন অার খুব স্বাভাবিকভাবেই ভারতে ফিরে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষভাবে নিজেকে যুক্ত করে ফেলেন । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ১৯১২ সালে একজন প্রতিনিধি হিসেবে জওহরলাল নেহেরু বাঁকিপুর কংগ্রেসে উপস্থিত ছিলেন।
বিবাহ
ভারতে প্রত্যাবর্তন করে ২৭ বছর বয়সী জওহরলাল নেহেরু ১৯১৬ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি ষোড়শী ,কমলা কাউলের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন । পরের বছরেই তাঁদের একমাত্র কন্যা ইন্দিরা প্রিয়দর্শীনির জন্ম হয়।
ভারতীয় রাজনীতিতে পদক্ষেপ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়টিতে একজন সুপ্রতিষ্ঠিত আইনজ্ঞ জওহরলাল নেহেরু ভারতীয় রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে লক্ষ্মৌ সম্মেলনে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দেশের স্বাধীনতার আহ্বান জানালে সেই সময় পিতার হাত ধরেই নেহেরু কংগ্রেসের রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক মতাদর্শ গঠন এবং রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে মহাত্মা গান্ধীর অবদান নেহেরুর জীবনে অনস্বীকার্য । মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে নেহেরুর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ১৯১৬ সালে। গান্ধীজির মতাদর্শ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁকে অনুপ্রাণিত করে থাকে।
নেহেরু জীবনে গান্ধীর প্রভাব
জওহরলাল নেহেরুকে প্রথম থেকেই গান্ধীজির দর্শন ও নেতৃত্ব গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছিল। গান্ধীজি সত্যাগ্রহ ও অহিংসার নীতিতে বিশ্বাস করতেন । চাম্পারান আন্দোলনের সময় নেহেরুর সাথে গান্ধীজির পরিচিতি ঘটে এবং নেহরু তাঁকে সাহায্য করেছিলেন এই আন্দোলনে ।
মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নেহেরু পরিবার তাদের ভোগ-বিলাসের জীবন পরিত্যাগ করেন এবং শোনা যায় যে তখন থেকেই নেহেরু খাদির তৈরি বস্ত্র পরিধান করতেন।
নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ‘ভগবত গীতা’ পাঠ করা ছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে ও জওহরলাল নেহরু গান্ধীর কাছ থেকে বিভিন্ন রকম পরামর্শ নিতেন এবং অধিকাংশ সময় তাঁর সঙ্গেই সময় অতিবাহিত করতেন । এইভাবে ক্রমশ জওহরলাল নেহেরু এক বিশিষ্ট সংগঠক হিসেবে জনপ্রিয়তা শীর্ষে চলে আসেন বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ বিহার ও কেন্দ্রীয় প্রদেশগুলিতে।
পরবর্তীকালে নেহেরুর পিতা মতিলাল নেহেরু এবং গান্ধীজি গ্রেপ্তার হওয়ার পর মা ও বোন সহ জওহরলাল নেহরু বেশ কয়েক মাস কারাবরণ করেছিলেন। ১৯২২ সালের চৌরি চৌরার হিংসাত্মক ঘটনার পরবর্তী কাল থেকে নেহরু ,গান্ধীর সাথে ওতপ্রোতভাবে কংগ্রেসে থেকে যান।
নবীন নেতা জওহরলাল নেহেরু
১৯১৯ সালে জওহরলাল নেহরু এলাহাবাদের হোম রুল লিগের সচিব হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯২০ সালে উত্তর প্রদেশের প্রতাপগড় জেলায় কিষাণ মার্চের নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন তিনিই। ১৯২০-২২-এর অসহযোগ আন্দোলনের কঠিন দিনগুলিতে জওহরলাল নেহরু দু’বার কারাবরণ করেছিলেন। এর পরে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।
সমস্যা জর্জরিত ভারতবর্ষের কথা মাথায় রেখে তিনি জাতীয়তাবাদী কর্মকাণ্ড স্থগিত রাখেন এবং সামাজিক সমস্যা ও স্থানীয় সরকারের প্রতি নজর দেন। ১৯২৪ সালে এলাহাবাদ মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং উক্ত পদে তিনি দুই বছর আসীন থাকেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে জওহরলাল নেহরু জাতীয় কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে দলের সভাপতি পদে নির্বাচিত হন।
ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত সম্পূর্ণ স্বাধীন ভারত গড়ার সংকল্প নেয় জাতীয় কংগ্রেস এই লাহোর অধিবেশনেই। পূর্ণ স্বরাজের উদ্দেশ্য মাথায় রেখে কংগ্রেস সভাপতি নেহেরু ১৯২৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাভি নদীর তীরে আয়োজিত এক জনসভায় ভারতের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে অর্থাৎ ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি ,কংগ্রেস সরাসরি পূর্ণ স্বরাজ আন্দোলনের ডাক দেয়।
ব্রিটিশ রাজ অন্যায়ভাবে লবণের উপর করারোপ করায় নেহেরু গুজরাট সমেত সমগ্র দেশের অন্যান্য অংশে সফর করেন এবং গণ আন্দোলনের ডাক দেন । দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি গ্রেফতার হন এবং ১৯৩১ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে অধিকাংশ সময়কালেই তিনি বোন ও স্ত্রীসহ কারাগারে ছিলেন। ১৯৩১ সালে মতিলাল নেহেরুর মৃত্যু হয়।
ভারত ছাড়ো আন্দোলন এবং নেহরুর অবদান
জেল থেকে ছাড়া পেয়ে নেহেরু সপরিবারে ১৯৩৫ সালে ইউরোপ যান যেখানে তাঁর স্ত্রী কমলা নেহেরুর চিকিৎসা হয়। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে জওহরলাল নেহেরু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হন এবং এর লক্ষ্মৌ সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন যেখানে ভবিষ্যত ভারতের জাতীয় অর্থনৈতিক নীতি হিসেবে সমাজতন্ত্রকে গ্রহণ করার পক্ষে নেহেরু নিজের বক্তব্য রেখেছিলেন।
১৯৩৮ সালে স্ত্রী কমলা নেহেরু মৃত্যু হয়।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের পক্ষ থেকে মিত্রশক্তির বিরূদ্ধে যুদ্ধে যোগদানের ঘোষণা করেন জওহরলাল নেহরু যার প্রতিবাদে সকল কংগ্রেসী জনপ্রতিনিধিরা নিজ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। যুদ্ধের পর ভারতীয়রা পূর্ণ স্বাধীনতা প্রাপ্ত করবে সেই আশায় নেহেরু ব্রিটিশদের সমর্থন দেন।
কিন্তু ব্রিটিশ সরকার কংগ্রেস নেতাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করলে নেহেরু ও মাওলানা আজাদ এর তীব্র প্রতিবাদ করেন অপরদিকে গান্ধী ও বল্লভভাই প্যাটেল আন্দোলনের ডাক দেন। বহু আলোচনার পরে কংগ্রেস “ভারত ছাড়” আন্দোলনের ডাক দেয়। দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে নেহেরু “ভারত ছাড়” আন্দোলনকে জনপ্রিয় করতে ভারতের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করেন এবং অবশেষে ব্রিটিশ সরকার ১৯৪২ সালের ৯ আগস্ট নেহেরু ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতাদের কে গ্রেফতার করে যারা প্রায় সকলেই ১৯৪৫ এর জুন মাস অবধি কারাবন্দি ছিলেন।
নেহেরু কন্যা ইন্দিরা গান্ধী ও জামাতা ফিরোজ গান্ধীও কিছু মাসের জন্য গ্রেফতার হন। নেহেরু ১৯৪৫ সালে জেল থেকে বের হয়ে ১৯৪৬-এর নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
১৯৪৬-এর ৬ জুলাই চতুর্থবারের জন্য কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন নেহেরু।
নির্বাচনের আগে থেকেই নিখিল ভারত মুসলিম লীগের নেতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ মুসলমানদের জন্য এক স্বতন্ত্র রাষ্ট্র পাকিস্তানের দাবি জানিয়েছিলেন। নেহেরু ভারত বিভাগকে সমর্থন করে ছিলন যার ফলস্বরূপ ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা পেয়ে থাকে। জওহরলাল নেহরু তাঁর জীবদ্দশায় ১৯৫১ থেকে ১৯৫৪— এই তিন বছর তিনি আরও তিনটি পদে নির্বাচিত হন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে জওহরলাল নেহেরু মুক্তিযুদ্ধের সময় ন’বার কারাগারে বন্দি অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জওহরলাল নেহরু
১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নেহেরু এবং টানা ১৭ বছর তিনি এই দায়িত্ব সামলে গেছেন। তাঁর শাসনকালে ভারতে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়। এই সময়কালে একটি ভারত-পাকিস্তান ও চীন-ভারত যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। ভারত-পাকিস্তানের শান্তি ও মৈত্রী পূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের হেতু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নেহেরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান নেহেরু-লিয়াকত চুক্তি তে স্বাক্ষর করেন । জওহরলাল নেহরু ২৭ মে, ১৯৬৪ পর্যন্ত ভারতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার সফল ভাবে পালন করেছিলেন।
“জহর কোট”- নেহেরুর style quotient
ব্যক্তিগত জীবনে জওহরলাল নেহরু এক অত্যন্ত রূচিবান পুরুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন ।নিজের ব্যতিক্রমধর্মী ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ করতেন তাঁর বেশ ভূষা র মাধ্যমে। ‘নেহেরু কোট’ বা বাংলায় যাকে আমরা জহরকোট বলি তার জনপ্রিয়তা এই মহান ব্যক্তিত্ব পরিধেয় পোশাক থেকেই শুরু হয়েছে । এ ছাড়াও জওহরলাল নেহেরু সমভাবে শিশু মহলে খুব জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন ।
শিশু দিবস
উনি ছোটদের খুব স্নেহ করতেন এবং গোলাপ ফুল তাঁর অন্যতম প্রিয় বস্তু ছিল । ছোটরা তাঁকে ভালোবেসে ,”চাচা নেহেরু” বলে সম্বোধন করত। ছোটদের প্রতি অগাধ প্রীতির কারণে নেহরুর জন্মদিন অর্থাৎ ১৪ই ফেব্রুয়ারি তারিখটি ‘শিশু দিবস’ হিসেবে প্রত্যেক বছর সারা দেশে মহাসমারোহে পালিত হয়ে থাকে।
সাহিত্যকর্ম
লেখক হিসেবেও জওহরলাল নেহেরু ছিলেন উল্লেখযোগ্য এক ব্যক্তিত্ব । ইংরেজিতে লেখা তাঁর তিনটি বিখ্যাত বই হল একটি আত্মজীবনী’, ‘বিশ্ব ইতিহাসের কিছু চিত্র’, এবং ‘ভারত আবিষ্কার'( Discovery of india ) চিরায়ত সাহিত্যের মর্যাদা লাভ করে আসছে বহু যুগ ধরে ।
মৃত্যু
১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম ভারত-চীন যুদ্ধের পরে নেহেরু অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কাশ্মীরে গিয়ে কিছুদিন বিশ্রাম নিয়র থাকেন। ১৯৬৪ সালের মে মাসে কাশ্মীর থেকে ফিরে আসার পরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং ১৯৬৪ সালের ২৭ মে নিজ কার্যালয়ে স্বাধীন ভারত্র প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু মৃত্যুবরণ করেন।
পরিশিষ্ট
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দেশকে ব্রিটিশ শাসনে ইতি টানতে এবং দেশকে স্বাধীন করতে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন ।স্বাধীন ভারতের সত্ত্বা যাতে অটুট থাকে সে জন্য নেহরু চাইতেন, যেন ভারতকে অন্য কোনো দেশের চাপ সহন করতে না হয়। দেশ নিজের সত্ত্বা বজায় রাখবে, অন্য দেশের বিষয়ে মধ্যস্থতা করবে না -এই রকম পাঁচটি নীতির দ্বারা শান্তি স্থাপনের বার্তা দিয়ে গেছেন তিনি । তিনি সব সময় চেয়ে এসেছিলেন যে ভারত তার নিজের স্বাধীন বিদেশ নীতি বজায় রাখবে, কোনো কারণেই সে তার নীতি বিসর্জন দেবে না।
জওহরলাল নেহেরু কে ছিলেন ?
~জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক অভিজ্ঞ নেতাএবং স্বাধীনভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু ।
জওহরলাল নেহেরু কোথায় ,কবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ?
~ ১৪ই নভেম্বর, ১৮৮৯ এলাহাবাদ শহরে ,গঙ্গা নদীর তীরে জওহরলাল নেহেরু জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
জওহরলাল নেহরু কোথায় ব্যারিস্টারি পড়ছিলেন ?
~জওহরলাল নেহেরু কেমব্রিজে ব্যারিস্টারি নিয়ে অধ্যয়ন করা শুরু করেন।
জওহরলাল নেহরুর কবে প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রী হন এবং গত বছর সেই দায়িত্ব পালন করে গেছেন ?
~১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নেহেরু এবং টানা ১৭ বছর তিনি এই দায়িত্ব সামলে গেছেন।
জওহরলাল নেহরুর মৃত্যু কবে ও কীভাবে হয়?
~১৯৬৪ সালের মে মাসে কাশ্মীর থেকে ফিরে আসার পরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং ১৯৬৪ সালের ২৭ মে নিজ কার্যালয়ে স্বাধীন ভারত্র প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু মৃত্যুবরণ করেন।