ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী ৮৪ বছর বয়সী রতন টাটা প্রত্যেকটি ভারতবাসীর কাছে এখনো পৌরুষের এক আদর্শ উদাহরণ। যৌবন অবস্থায় তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং পৌরুষ টেক্কা দিতে পারত যেকোনও বিখ্যাত বলিউডি নায়ককে ও । তা সত্ত্বেও এমন এক সফল শিল্পপতি , অতি সুপুরুষ ও মহান হৃদয়ের এক ব্যক্তি আজ পর্যন্ত থেকে গেলেন অবিবাহিত। যেকোনো কারোর মনে প্রশ্ন আসতেই পারে স্বনামধন্য এই ব্যক্তির জীবনে কি কখনও প্রেম আসেনি ?
সোশ্যাল মিডিয়াকে দেওয়া কোন এক সাক্ষাৎকারে রতন টাটা জানিয়েছিলেন ,জীবনে একবারই তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিয়ের ও সব ঠিকঠাক প্রায় হয়েই গিয়েছিল । কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে তা বাস্তবায়িত হয়ে উঠতে পারেনি । ১৯৩৭ সালে, গুজরাতের সুরাট শহরজন্ম হয় রতন টাটার। সপরিবারে তাঁর শৈশব অতিবাহিত হয় খুব আনন্দে কিন্তু যখন তাঁর দশ বছর বয়স , তখনই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাঁর বাবা-মা, নাভাল এবং সুনি টাটা-র। পরবর্তীকালে তিনি ও তাঁর ভাই বেড়ে উঠেছিলেন তাঁদের ঠাকুমার তত্ত্বাবধানে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে দুই ভাই গ্রীষ্মের ছুটিতে লন্ডনে পাড়ি দেন । সেই সময় থেকেই ঠাকুমার হাতেই তৈরি হয়েছিল ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ীর মূল্যবোধ।
জানা যায় বাবা নাভাল টাটার সঙ্গে পড়াশোনা নিয়ে মতপার্থক্যও হয়েছিল রতন টাটার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্কিটেকচার-এ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন রতন টাটা। পরবর্তী দু’বছর তিনি কাজ করেছিলেন লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে। আর সেখানেই রতন টাটার জীবনে প্রথমবারের জন্য প্রেমের সঞ্চয় ঘটে।
রতন টাটার জীবনের সেই নস্টালজিক মুহূর্তগুলি দুর্দান্ত ছিল। চাকরিতে পসার বাড়ার সাথে সাথে তাঁর নিজের গাড়ি হল, যে চাকরিটি করতেন, তাও তাঁর নিজের পছন্দের ছিল।আর এই রকম এক সুন্দর মুহূর্তে এক মার্কিন কন্যার প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। প্রেমের পরিণতি হিসেবে বিয়ের কথাবার্তা ও চলে । বিয়েরও প্রায় আয়োজন হয়ে গিয়েছিল কিন্ত সেই সময়েই ঠাকুমার অসুস্থতার কারণে রতন টাটা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন।
- শিউলি ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত, Details about Shiuli flower
- পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত, Best details about the Battle of Plassey in Bengali
- পণপ্রথা একটি জাতীয় সমস্যা, Best essay on the Dowry System in Bengali
- অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এই বিশেষ গাছটিতেই পাণ্ডবেরা লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁদের অস্ত্র সরঞ্জাম!! Pandavas Hid Their Weapons in This Tree
- গরুদের সচিত্র পরিচয়পত্র 😮 আধার কার্ড বিতরণ ~ ভারত সরকারের এক অভিনব প্রয়াস! Identity Card for Cows in India – Read Details in Bengali
তবে সেই পরিস্থিতিতে ও প্রেম ভাঙেনি তাঁর। তাঁদের দুজনের মধ্যে এই কথা হয়েছিল যে রতন টাটা ফিরে আসার কয়েকদিন পর তাঁর প্রেয়সী ও ভারতে চলে আসবেন আর এই দেশেই সাজাবেন সুখের সংসার। মহিলার পরিবারেরও তাতে পূর্ণ সম্মতি ছিল। কিন্তু ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধ এই সবকিছুর প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। যুদ্ধ বাঁধার পরবর্তীকালে রতন টাটার প্রেমিকার বাবা-মা, তাঁদের মেয়ের ভারতে আসার বিষয়ে বাধ সাধেন আর এভাবেই ক্রমশ তাঁদের দুজনের সেই সুন্দর সম্পর্কও ভেঙে যায়। ফলশ্রুতিস্বরূপ অবিবাহিত ই থেকে যান ভারতের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী। পরবর্তীকালে রতন টাটা ব্যবসায়িক ও সামাজিক জীবনে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন।।
১৯৯১ সালে জেআরডি টাটার পর, টাটা গ্রুপের পঞ্চম চেয়ারম্যান পদে ও আসীন হন রতন টাটা। লাভ করেন পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ-এর মতো সম্মান। ব্যবসায়িক ব্যাপক সাফল্যের জন্য জিতে নেন সিএনএন-আইবিএন ইন্ডিয়ান অফ দ্য ইয়ার খেতাব। কিন্তু তাঁর প্রথম ভালোবাসা অসম্পূর্ণই থেকে যায় এবং তাই তাঁর জীবনে পরবর্তীকালে প্রেম বা বিয়ে – কোনওটাই আর করে হয়ে ওঠেনি ।