সংস্কৃতে একটি প্রবাদবাক্য আছে “মহত্ত্বাদ্ ভারতবত্ত্বাচ্চ মহাভারতমুচ্যতে” যা বাংলা করলে অর্থ দাঁড়ায় , যা নেই ভারতে, তা নেই মহাভারতে। অর্থাৎ যে বস্তুটির মহাভারতের গল্পে উল্লেখ পাওয়া যায় না তা সমগ্র ভারতবর্ষ তথা বিশ্ব সংসারেও দেখা মেলা ভার।
ভারতবর্ষের অন্যতম মহাকাব্য ‘মহাভারত’ এর যুগে এমনই কিছু বস্তু বা সরঞ্জাম আবিষ্কার করা হয়েছিল বা ব্যবহৃত হয়েছিল যা এ যুগেও মানুষের চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহাভারত পাঠ করেন নি এমন খুব কম ভারতবাসীই বোধহয় আছে । এই মহাকাব্যে যে ঘটনাটি সবথেকে হৃদয়বিদারক তা হল বিশাল সাম্রাজ্য এবং ঐশ্বর্যের অধিকারী হয়েও পাণ্ডবেরা কৌরবদের দূরভিসন্ধি এবং অসৎ সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে নিজেদের সব ঐশ্বর্য ত্যাগ করে বারো বছরের জন্য বনবাস এবং এক বছরের অজ্ঞাতবাস ভোগ করেছিলেন। । সেই সময় কৌরবদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দ্রৌপদী সহ পাণ্ডবেরা নিজেদের একাধিক রূপ পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে কাটিয়েছিলেন। অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এই একটি বছর তাঁদের যাতে কেউ চিনতে না পারে সেজন্য নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র খুব সঙ্গোপনে একটি গাছের ভেতর লুকিয়ে রেখেছিলেন।
তবে এই কথাটি হয়তো অনেকের কাছে অজ্ঞাত যে যেই গাছে পাণ্ডবেরা নিজেদের অস্ত্রশস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলেন সেই গাছটি বর্তমানে কোথায় এবং তার কী বা নাম? ঐতিহাসিক সেই গাছটির নাম হল ,’শমি বৃক্ষ’। এই বৃক্ষের কোটরেই শক্তিশালী পাণ্ডবেরা দিনের পর দিন সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ভাবে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলেন। কুরুবংশের অস্তিত্ব বহুদিন আগেই শেষ হয়ে গেলেও এই গাছটি কিন্তু বর্তমানকালেও বহন করে চলেছে সেই পুরোনো দিনের ঐতিহ্য ।
- শিউলি ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত, Details about Shiuli flower
- পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত, Best details about the Battle of Plassey in Bengali
- পণপ্রথা একটি জাতীয় সমস্যা, Best essay on the Dowry System in Bengali
- বিয়েতে যৌতুক হিসেবে ২১ টি বিষধর সাপ 🐍 !! 21 Snakes as Wedding Gift – Bangla Viral News
- অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এই বিশেষ গাছটিতেই পাণ্ডবেরা লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁদের অস্ত্র সরঞ্জাম!! Pandavas Hid Their Weapons in This Tree
শমি বৃক্ষ নামক গাছটি আজও রয়ে গেছে এই ধরিত্রী র বুকে। পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্গত দক্ষিণ দিনাজপুরে গেলেই দেখা মিলবে এই বিশেষ গাছটির। উক্ত জেলার হরিরামপুরের হাতিডুবা গ্রামেই স্বমহিমায় অবস্থান করছে ‘শমীবৃক্ষ’ । বর্তমানকালে এই গাছটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এক বিরাট পর্যটন কেন্দ্র।দুর্লভ প্রজাতির এই গাছটি সেইভাবে দেখা না গেলেও একাধিক শুভ কাজে তা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।কথিত আছে যে কবি কালিদাস এই শমি বৃক্ষের নীচে বসেই জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। জনশ্রুতি অনুযায়ী বাড়িতে যদি শমি বৃক্ষ উপস্থাপনা করে পুজা করা হয় তাহলে গৃহস্থের সকল বাধা বিঘ্ন দূর হয়ে যায়।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে চোখের জন্য ও শমি বৃক্ষ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ মানা হয়ে থাকে এবং একই সাথে অনেক রোগের ওষুধ তৈরিতে এই গাছটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।শমি বৃক্ষ সিদ্ধিদাতা গনেশের অতি প্রিয় বৃক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় । বর্তমানে মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকে এটি বিশাল জনপ্রিয় একটি বৃক্ষ ।