বিয়েতে যৌতুক বা পণ দেওয়া বা নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু, তা সত্ত্বেও এই আইন লঙ্ঘন করে এখনও দেশের বহু জায়গায় পণ দেওয়া নেওয়ার প্রথার বহুল প্রচলন রয়েছে। তবে উপহার হিসেবে বিয়ের সময় মেয়ের বাবা মা খুশি হয়ে গয়না, পোশাক, খাট-বিছানা, আলমারি ইত্যাদি মেয়ের জন্য দিলে তাতে কোনও সমস্যা হয় না।কিন্তু আমাদের দেশে এমন একটি গ্রাম আছে যেখানে বিয়েতে নতুন জামাইকে যৌতুক হিসেবে কোনও জিনিসপত্র নয়, বিষধর সাপ দেওয়া হয়ে থাকে ! ভাবলেই হয়ত অনেকের গা শিউরে উঠছে! কিন্তু কথাটি একদম সত্যি।
ভারতবর্ষের অন্যতম প্রধান রাজ্য মধ্যপ্রদেশে গৌড়ীয় সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের মধ্যে এ ধরনের একটি অদ্ভুত প্রথার প্রচলন রয়েছে বহু যুগ ধরে । অদ্ভুত ধরনের এই প্রথাটি মেনে এই এলাকার বাসিন্দারা মেয়ের বিয়েতে জামাইকে যৌতুক হিসেবে ২১টি বিষধর সাপ দিয়ে থাকেন কারণ তাঁরা মনে করেন যে নতুন জামাইকে সাপ প্রদান করলে নবদম্পতির বিবাহোত্তর জীবন সুখের হয়ে থাকে; আর তা নাহলে নাকি বিয়ে খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়।
অতএব, মেয়ের বিবাহ ঠিক হওয়ার পর পরই সাপের খোঁজ করতে বেরিয়ে পড়েন পাত্রীর বাবা। খুঁজে খুঁজে ২১ খানা বিষধর সাপ জোগাড় করেন তিনি। বিয়ের শুভদিনে তা একটি বাক্সে করে জামাইয়ের হাতে তুলে দেন শ্বশুরমশাই । এই ক্ষেত্রে সাপেদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং দেখভালের একটি নিয়ম ও প্রচলিত রয়েছে। পরিবারের অন্য সদস্যদের মতো সাপগুলিকেও অতীব যত্ন সহকারে দেখাশোনা করতে হয়। সাপগুলি যতক্ষণ বাক্সে থাকছে সেই অবস্থায় কোনও সাপের মৃত্যু হলে চলবে না; আর যদি ও বা কোনও কারণবশত একটি সাপের ও মৃত্যু ঘটে তাহলে সেই পরিবারের সকল সদস্যকে শোকপালন করার জন্য নিজেদের মাথা কামিয়ে ফেলতে হবে।
গৌড়ীয় সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষেরা পেশাগতভাবে বেদে অর্থাৎ তাঁরা সাপ ধরার কাজ করেন ও সাপের খেলা দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করে থাকেন। । এই সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনের ভরণপোষণের সাথে তাই সাপ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে। অতএব এরা সাপ কে খুবই শুভ বলে মনে করেন। এই সম্প্রদায়ের ছোট ছোট বাচ্চারাও সাপকে ভয় পায় না। এরা অবলীলায় বিষধর সাপের সঙ্গে খেলা করে থাকে আর এই কারণেই মেয়ের বিয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে যৌতুক হিসেবে শ্বশুরমশাইরা তাঁদের জামাইকে সাপ প্রদান করে থাকেন।
তাঁরা মনে করেন যে বিয়ের উপহার হিসেবে সর্প দান করলে সর্পদেবীর আশীর্বাদে তাঁদের মেয়ের জীবনে কখনো অন্ন বস্ত্রও বাসস্থানের অভাব হবে না। বিয়ে সুখের হওয়ার সাথে সাথে খাদ্য বস্ত্রের অভাব না থাকাটাও তাঁদের কাছে একটি বড় বিষয়। তাই সাপ প্রদান করার এই অদ্ভুত রীতিটি এখনো চলে আসছে এই গ্রামে আর এটি একটি অত্যন্ত শুভ কার্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
আরো অবাক করা সব খবর
- শিউলি ফুল সম্পর্কে বিস্তারিত, Details about Shiuli flower
- পলাশীর যুদ্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত, Best details about the Battle of Plassey in Bengali
- পণপ্রথা একটি জাতীয় সমস্যা, Best essay on the Dowry System in Bengali
- অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এই বিশেষ গাছটিতেই পাণ্ডবেরা লুকিয়ে রেখেছিলেন তাঁদের অস্ত্র সরঞ্জাম!! Pandavas Hid Their Weapons in This Tree
- গরুদের সচিত্র পরিচয়পত্র 😮 আধার কার্ড বিতরণ ~ ভারত সরকারের এক অভিনব প্রয়াস! Identity Card for Cows in India – Read Details in Bengali