পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্প চালু হয়েছে যা পেয়েছে ব্যাপক সাফল্যেও। নারী, পুরুষ, শিশু, শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে এবং তাদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে যে বিবিধ প্রকল্পগুলি চালু হয়েছে তারই হাত ধরে বর্তমানে এগিয়ে চলছে বাংলা দ্রুতগতিতে ।
এই সব বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মধ্যে আরেকটি প্রকল্প যেটি রাজ্যের উন্নয়নের কর্মসূচিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে সেটি হলো খেলাশ্রী প্রকল্প। উন্নয়নমূলক এই প্রকল্পটি রাজ্যের খেলাধুলার কাজকর্মকে উৎসাহিত করার জন্যই মূলত চালু করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের যুব কল্যাণ এবং ক্রীড়া দপ্তরের অধীনে আসীন খেলাশ্রী প্রকল্পটির মাধ্যমে রাজ্যের ক্রীড়াবিদদের সম্মান জ্ঞাপন করা এবং রাজ্যের খেলাধুলো কে অনুপ্রানিত করার জন্য এই প্রকল্প নিয়োজিত।
প্রকল্পটির উদ্দেশ্য
ক্রীড়া জগতকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য এবং সেই উদ্দেশ্য মাথায় রেখে চালু করা হয়েছে খেলাশ্রী প্রকল্পটি। মূলত স্কুল , কলেজ, মাদ্রাসা ক্লাব স্তরের খেলোয়াড়দের উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রীড়াবিদ তৈরি করা এবং বাংলার উন্নয়নে সহায়তা করা এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ।
খেলাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা সমূহ
খেলাশ্রী প্রকল্প এর সুবিধাগুলি নিম্নে উল্লিখিত হল:
- খেলাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের স্কুল, কলেজ এবং ক্লাবগুলিকে পাঁচটি করে ফুটবল প্রদান করা হবে।
- এই প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ- মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাই মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা লীগের প্রথম বিভাগ থেকে পঞ্চম বিভাগের সকল ক্লাবগুলি এবং ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলি বার্ষিক আর্থিক সহায়তা পাবে এবং ফুটবল ও পাবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
- খেলাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজ বৃদ্ধি পাবে।
- খেলাশ্রী প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ও ক্লাবগুলি রাজ্য সরকারের থেকে যে আর্থিক অনুদান লাভ করবে তার ফলে ক্রীড়াক্ষেত্রে খেলোয়াড়েরা অনুপ্রেরণা পাবে ও তাদের পারদর্শীতা বাড়বে ।
- খেলাশ্রী প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়া জগত কে কেন্দ্র করে রূপায়িত হয়েছে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা ছাড়াও এই প্রকল্পের মাধ্যমে বর্ষীয়ান এবং কৃতি ক্রীড়াবিদদের সম্মান জ্ঞাপন করা হয়ে থাকে।
খেলাশ্রী প্রকল্প উঠতি খেলোয়াড়দের উৎসাহ বৃদ্ধি করতে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে । - খেলাশ্রী প্রকল্পের অধীনে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত খেলাশ্রী অনুষ্ঠানে কৃতী ক্রীড়াবিদদের হাতে স্মারক, ট্রফি ও উত্তরীয় তুলে দেওয়া ও হয়ে থাকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
খেলাশ্রী প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবে
খেলাশ্রী প্রকল্পের জন্য আলাদা ভাবে কোন আবেদন করার প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক অনুদান এবং পাঁচটি করে ফুটবল প্রদান করা হবে।
- পথ নিরাপত্তার এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ Safe drive save life ( সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ ), Safe drive save life scheme in Bengali
- যুবশ্রী প্রকল্প সমস্ত তথ্য | Yuvashree Prakalpa online application form, fees, eligibility – all details in Bengali
- স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্প ~ স্বাবলম্বী হওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় | Swami Vivekananda Swanirbhar Karmasansthan Prakalpa Application Form, Fees, Eligibility, Documents, All details in Bangla
- খেলাশ্রী প্রকল্প ~ ক্রীড়ার উন্নতিকল্পে এক অভিনব উদ্যোগ | Khelashree scheme All details in Bengali
খেলাশ্রী প্রকল্প এবং পেনশনের সুবিধা
প্রাক্তন খেলোয়াড়দের পেনশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।এই রাজ্যের ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ২ হাজার ক্রীড়াবিদদের প্রদান করা হবে এক হাজার টাকা করে পেনশন তাঁদের বাকি জীবন সুনিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ।পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা মতে এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী প্রতি বছর মোট ১০০ জন খেলোয়াড়কে বেছে নেওয়া হবে এবং তাঁরা বাইরে খেলতে গেলে তাঁদের যাবতীয় ব্যয় বহন করবে রাজ্য সরকার।
কোচিং ক্যাম্প গুলিকে খেলাশ্রী প্রকল্পের আওতায় আর্থিক অনুদান পেতে হলে নিম্নলিখিত শর্তাবলী প্রযোজ্য:
• কোচিং ক্যাম্পের কোচকে অবশ্যই স্বীকৃত রাজ্য ক্রীড়া সংস্থার অনুমাদন প্রাপ্ত কোচ অথবা
প্রাক্তন জাতীয় বা রাজ্য দলের খ্যাতনামা ক্রীড়াবিদ হতে হবে।
• কোচিং ক্যাম্পে ন্যূনতম ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকা বাঞ্ছনীয় ।
• কোচিং ক্যাম্পের শিক্ষার্থীদের নাম, বাবার নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বরের তালিকা পেশ
করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ।
• কোচিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপযোগী ন্যূনতম নিজস্ব পরিকাঠামো থাকতে হবে।
• কোচিং ক্যাম্পটি যাতে সারা বছর চালু থাকে সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে ।
• সরকার স্বীকৃত নির্ধারিত আবেদনপত্রেই আবেদন করতে হবে। এই আবেদনপত্র এবং বিস্তারিত তথ্য
দপ্তরের ওয়েবসাইট www.wbsportsandyouth.gov.in থেকে ডাউনলােড করা
যাবে এবং সরাসরি দপ্তর থেকেও প্রাপ্ত করা যাবে ।
খেলাশ্রী প্রকল্পের আবেদনপত্র কোথায় জমা দিতে হবে
আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট জেলা যুব আধিকারিকের দপ্তরে/যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের নিম্নোক্ত ঠিকানায় জমা দিতে হবে,
যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তর
ব্লক-‘এ’, সপ্তম তল, নব মহাকরণ ভবন, ১, কিরণ শঙ্কর রায় রােড, কলকাতা-৭০০ ০০১
ফোন (০৩৩) ২২৬২-৪২৪২, ২২৬২-৭৪৬২ | ইমেল[email protected]
যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তর ;পশ্চিমবঙ্গ সরকার
খেলাশ্রী প্রকল্পের সার্থক রূপায়ণ
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে খেলাশ্রী প্রকল্পের অধীনে ক্রীড়া ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিভাগের ৮৬১ টি কোচিং ক্যাম্পগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে ইতিমধ্যে ।রাজ্যস্তর-সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উপযোগী ক্রীড়াবিদ তৈরি করার কাজে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে উপরোক্ত প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের বিভিন্ন কোচিং ক্যাম্পকে বার্ষিক ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।
চলতি বছরে ও রাজ্যে বহু ক্লাবকে ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মোট ৩৪টি স্টেডিয়াম নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যের ৪০০ টি খেলার মাঠের সংস্কার করে উন্নয়ন করা হয়েছে। হকির অ্যাস্ট্রোটার্ফের উন্নতির কথা মাথায় রেখে কুড়ি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে।
শুধু ঘোষণা করেই রাজ্য সরকার থেমে থাকেননি ; খেলাশ্রী অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়েছে পঞ্চাশ জন ক্রীড়াব্যক্তিত্বকে। তাঁদেরকে ‘খেল সম্মান’, ‘বাংলার গৌরব’, ‘জীবন কৃতী’এবং’ ক্রীড়া গুরু’ পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। ‘জীবন কৃতী’ পুরস্কার লাভ করেছেন বীর বাহাদুর ছেত্রী। মোট ১৬ জন খেলোয়াড়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ‘খেল সম্মান’ পুরস্কার ।
পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে রয়েছেন সালমা মাঝি, তপন পালের মতন ব্যক্তিত্বরা । ‘বাংলার গৌরব’ পুরস্কার পেয়েছেন মোট ২৬ জন ক্রীড়াব্যক্তিত্ব। বিভিন্ন বিভাগের মোট ৭ জন কোচের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ‘ক্রীড়া গুরু’ পুরস্কার।
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন উত্তর / FAQ
প্রঃ খেলাশ্রী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা কারা পাবে?
উঃ খেলাশ্রী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা শুধুমাত্র ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং ক্লাবগুলি পাবে।
প্রঃ খেলাশ্রী প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবে?
উঃ খেলাশ্রী প্রকল্পের জন্য আলাদা ভাবে কোন আবেদনের প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলিকে আর্থিক অনুদান এবং পাঁচটি করে ফুটবল প্রদান করা হবে।
প্রঃ খেলাশ্রী প্রকল্পের আর্থিক অনুদান কারা পাবে?
উ: মাধ্যমিক ও উচ্চ- মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাই মাদ্রাসা, কলকাতা লীগের প্রথম বিভাগ থেকে পঞ্চম বিভাগের সকল ক্লাবগুলি এবং ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলি এই প্রকল্পের অনুদান পাবে।
প্রঃ খেলাশ্রী প্রকল্পের আর্থিক অনুদান কীভাবে পাওয়া যাবে?
উঃ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে খেলাশ্রী অনুষ্ঠানে উল্লিখিত আর্থিক অনুদান এবং ফুটবল তুলে দেওয়া হয় প্রত্যেকটি ক্রীড়া ক্লাবগুলিকে।