কিভাবে ভালো ল্যাপটপ চিনবেন? Know which laptop is the best one for you in Bengali 


ডিজিটাল যুগে আজকাল সকলের ঘরে ঘরে মোবাইল, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ রয়েছে। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই কম্পিউটার থেকে ল্যাপটপ বেশি পছন্দ করেন, এর প্রধান কারণ ল্যাপটপ সহজেই যেকোনো জায়গায় সাথে করে নিয়ে যাওয়া যায় এবং এক সুইচের দ্বারাই চালু হয়ে যায়, কম্পিউটারের মত অনেকগুলো হার্ডওয়্যার এতে আলাদা ভাবে ব্যবহার হয়না।

যেকোন ভালো ল্যাপটপ চেনার জন্য র‌্যাম, হার্ডডিস্ক, প্রসেসর, মাদারবোর্ড ডিসপ্লে, ব্রান্ড ইত্যাদি বিষয় গুলো ভালো ভাবে পরীক্ষা করে দেখে কিনতে হয়। তবে ল্যাপটপ এর প্রধান দুইটা অংশকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত, সেগুলো হল- হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যার। কোনও ব্যক্তি সফ্টওয়্যার এর থেকে হার্ডওয়্যার এর প্রতি গুরুত্ব দিয়ে যদি কোনো ল্যাপটপ ক্রয় করেন তবে তাদের ঠকে যাওয়ার বা টাকা লোকশানের কোনো আশঙ্কা থাকবে না। 

কিভাবে ভালো ল্যাপটপ চিনবেন?

ভালো ল্যাপটপ চেনার লক্ষণীয় বিষয়গুলি, Some of the important things to know about a good laptop are:

ল্যাপটপের দাম ও সার্ভিস :

 ল্যাপটপ কিনতে গেলে সব সময় দেখতে হবে যে ল্যাপটপের দাম ও সার্ভিস কেমন, সাধারণত দাম বেশি হলে ল্যাপটপের সার্ভিস এবং কোয়ালিটি ভালই হয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ল্যাপটপের দাম বেশি হওয়া সত্বেও তেমন ভালো সার্ভিস থাকে না। একটা কথা মনে রাখবেন ভালো দামে নামি কোম্পানির ভালো মডেল এবং ব্রান্ড দেখে ল্যাপটপ ক্রয় করলে ঠকে যাওয়ার সুযোগ থাকে না।

ভালো ল্যাপটপ চেনার লক্ষণীয় বিষয়গুলি

ল্যাপটপ বর্তমান জেনারেশন :

 বেশির ভাগ মানুষ ল্যাপটপ কেনার পূর্বে জেনারেশন সম্পর্কে জেনে নিতে চায়। বিশেজ্ঞদের মত অনুযায়ী যেকোন জেনারেশনের ল্যাপটপ ভাল হতে পারে।  ল্যাপটপ কেনার সময় দেখে নেওয়া উচিত যে সেই ল্যাপটপ টি আপনি যে কাজের জন্য কিনতে চাইছেন সে কাজটা নির্দিষ্ট ল্যাপটপটি দিয়ে ভালো ভাবে করা যাবে কি-না। কারণ ৩য় জেনারেশনের ল্যাপটপ দিয়ে যে কাজ করা যায়, ৭ম জেনারেশনের ল্যাপটপ দিয়েও সেই কাজ কাজ করা সম্ভব। তাই আপনি জেনারেশন না দেখে বরং ল্যাপটপপের কাজের পারফামেন্স দেখাবেন।

ল্যাপটপ বর্তমান জেনারেশন

ল্যাপটপের কনফিগারেশন :

ল্যাপটপের কনফিগারেনশন বলতে সেই পার্টস গুলো কে বোঝায় যা দিয়ে ল্যাপটপ তৈরী করা হয়েছে। যেমন- মাদারবোর্ড, র‌্যাম, প্রসেসর, হার্ডডিস্ক, পাওয়ার সাপ্লাই, রাইটার ইত্যাদির বিষয়। কোনো ল্যাপটপের কনফিগারেশন কি আছে তা দেখার জন্য সহজ উপায় হল কম্পিউটার আইকনের উপর মাউসের ডান দিকের বাটন ক্লিক করে প্রোপার্টিজ থেকে বেসিক কনফিগারেশন দেখে নিতে পারেন। যার মধ্যে প্রসেসর, র‌্যাম, উইন্ডোজ দেখা যাবে। তবে আরও অগ্রিম লেভেলের বিস্তারিত কনফিগারেশন সম্পর্কে জানতে হলে গুগলে সার্চ করে জানতে পারেন।

ল্যাপটপের দ্রুত কর্মক্ষমতা :

  ল্যাপটপ কেনার সময় ল্যাপটপের কর্মক্ষমতার শীঘ্রতা সম্পর্কে জেনে বুঝে ক্রয় করবেন, যেমন- র‌্যাম স্পিড, প্রসেসর স্পিড, হার্ডডিস্ক স্পিড ইত্যাদি বিষয় আপনি ল্যাপটপের টাস্ক ম্যানেজারে দেখে নিতে পারেন। তাছাড়া ল্যাপটপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়ার জন্য অনলাইনে কিছু ফ্রি সফ্টওয়্যার আছে যেগুলো ইনস্টল করে মুহূর্তের মধ্যে সব তথ্য পেয়ে যাবেন। বিক্রেতাকে যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে সফটও়্যারগুলোর দ্বারা আপনি সেই দোকানে বসে ল্যাপটপের সকল কনফিগারেশন সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন, অথবা অনলাইন থেকে হার্ডওয়্যার টুলস্ চেকার নামক সফটওয়্যার আগে থেকেই ডাউনলোড করে প্রেনড্রাইভে নিয়ে ল্যাপটপ কিনতে যেতে পারেন।

হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সম্পর্কে বিশদ তথ্য, Best details on Hardware and Software in Bengali 

ল্যাপটপের ব্রান্ড ও মডেল :

বাজারে থাকা সব ল্যাপটপের ব্রান্ড এবং মডেল ভালো হয় না। তাই বাজার থেকে ল্যাপটপ কিনতে যাওয়ার আগে যে ল্যাপটপটি ক্রয় করতে চাইছেন সেই ব্র্যান্ডের মডেল যদি পরিচিত কারো কাছে থাকে তবে এর সার্ভিস রিভিউ সম্পর্কে আগেই জেনে নিন। অথবা অন্য কোনো উপায়ে হলেও জরুরী তথ্য নিয়ে নেওয়া উচিত, ফলে আপনারই সুবিধা হবে।

ল্যাপটপের ব্রান্ড ও মডেল :

ল্যাপটপের ব্যাটারী ব্যাকআপ :

যেহেতু ল্যাপটপ ব্যবহার সহজ এবং এটি যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার মত সুবিধা থাকে, ফলে এর ব্যাটারি ব্যাকআপ ভালো থাকা খুব জরুরী, কারণ সব সময় যে সাথে ইলেকট্রিক সংযোগ থাকবে এমন কোনো কথা নেই। তাই যেকোনো ল্যাপটপ ক্রয় করার আগে আপনাকে জানতে হবে যে সেই ল্যাপটপের ব্যাটারী ব্যাকআপ কেমন, কারণ চার্জ ব্যাকআপ যদি ভালো না থাকে তবে ব্যবহারে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশির ভাগ সময় দেখা যায় যে ব্যবহারকারী নিজের ভ্রমণ করার সময় ব্যবহার করার জন্যও ল্যাপটপ ক্রয় করেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে যদি ল্যাপটপের চার্জ ভালো না যায় তবে সেটা ক্রয় করা বৃথা বলে মনে হয়। অনেকেই বাড়িতে ল্যাপটপকে চার্জে দিয়ে ব্যবহার করেন কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া ল্যাপটপ চার্জে দিয়ে ব্যবহার করা উচিত নয়।

ল্যাপটপ অপারেটিং সিস্টেম :  

 ল্যাপটপ কেনার আগে ক্রেতা কে জেনে নিতে হবে যে সেই ল্যাপটপের সাথে কোন কনফিগারেন উইন্ডোজ সাপোর্টেবল ভালোভাবে সাপোর্ট করবে। যদিও বেশিরভাগ ল্যাপটপে যেকোন আপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ, উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ সেভেন, উইন্ডোজ টেন, আইওএস, কালি লিনাক্স সাপোর্ট করে, কিন্তু সহজে আপডেট করা এবং আপনার জরুরী কাজের জন্য কোন আপরেটিং সিস্টেম ভালো হবে সেটা জানা থাকলে সঠিক আপারেটিং সিস্টেমের ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারবেন। 

ল্যাপটপের স্ক্রিন ও ডিসপ্লে :

 ল্যাপটপ কেনার পূর্বে অবশ্যই তার ডিসপ্লে এবং স্ক্রিন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। ডিসপ্লে সম্পর্কে জানতে হবে সেটা এল.সি.ডি বা এল.ই.ডি বা ফোরকে ডিসপ্লে কি-না, এর রেজুলেশন ধারণ ক্ষমতা কতটুকু, তাছাড়া এতে চোখের জন্য কোন প্রটেকটর আছে কি-না সেটাও দেখতে হবে। এক কথায় ল্যাপটপের ডিসপ্লে সম্পর্ক বিস্তারিত ডিসপ্লে সেটিং দেখতে হবে। এসব না বুঝে ল্যাপটপ ক্রয় করলে রেজুলেশন এবং চোখের সমস্যা হতে পারে, কারণ এগুলোই হল ল্যাপটপের স্ক্রিন ও ডিসপ্লের সমস্যার খারাপ দিক।

ল্যাপটপের স্ক্রিন ও ডিসপ্লে :

বিপিও বা বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং এর সম্পৰ্কে বিস্তারিত তথ্য, Detailed information on BPO or Business Process Outsourcing in Bengali

কম দামের মধ্যে ভালো মানের ল্যাপটপ কিভাবে চিনবেন? How to recognize a good quality laptop at a low price?

 কম দামের মধ্যেই ভালো মানের ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এমন কোনো ল্যাপটপ ক্রয় করতে গিয়ে যদি কেউ মনে করে যে ল্যাপটপের তো ওয়্যারেন্টি/গ্যারেন্টি দেওয়া আছে, কোনো রকম সমস্যা হলে পরে ফ্রি তে ঠিক করিয়ে নিতে পারবেন তাহলে হয়তো আপনি ভুল করছেন। কারণ কেউ যখন টাকার বিনিময়ে ল্যাপটপ কিনে বাড়িতে নিয়ে আসে তখন বিক্রেতারা এর আর কোনও দায়-দায়িত্ব নেবে না। কোন সমস্যা নিয়ে তাদের কাছে গেলে কোম্পনির সার্ভিস সেন্টারে চলে যেতে বলবে; আর তখন থেকেই শুরু হয়ে যাবে আপনার কষ্টের টাকা দিয়ে ক্রয় করা ল্যাপটপের খুঁত এবং ক্ষতি, তাই ল্যাপটপ কেনার আগে কোন বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত তা দেখে নিন।

কম দামের মধ্যে ভালো মানের ল্যাপটপ কিভাবে চিনবেন?

কম দামে ভালো ল্যাপটপ বাছাই করার উপায় :

নির্দিষ্ট ল্যাপটপের ব্রান্ড এবং মডেলের সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হবে।

স্ক্রিন ও ডিসপ্লে কোয়ালিটি তথা রেজুলেশন প্রটেক্টর সম্পর্কে জেনে নিন।

ব্যাটারী এবং এডাপ্টার কোয়ালিটি ও লাইফটাম সম্পর্কে জানতে হবে।

ল্যাপটপের ব্যাটারী ব্যাকআপ টাইম ও চার্জিং টাইম সম্পর্কে দেখতে হবে।

ল্যাপটপ কিবোর্ড/টাচ্ প্যাড, কোন কোন দেশের ভাষা সমর্থন করে এই সম্পর্কে জানতে হবে।

ল্যাপটপের প্রসেসর ও সিপিইউ কনফিগারেশন ক্ষমতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বুঝে নিতে হবে।

ল্যাপটপের র‌্যাম স্পিড কত আছে, আপনার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু আছে কি না তা জানাতে হবে।

ল্যাপটপের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি হার্ডড্রাইভ এসডি না এসএসডি তা জেনে নেওয়া ভালো।

ক্যামেরা রের্কডিং, ওয়েবক্যাম কোয়ালিটি কতটুকু ভালো তা জানতে হবে।

ল্যাপটপ কেনার আগে সব হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন তালিকা দেখা উচিত।

ল্যাপটপে রের্কডিং অডিও ও সাউন্ড ভালো ভাবে বাজিয়ে দেখে নিয়ে কিনতে হবে।

ল্যাপটপ ভিডিও/গ্রাফিক্স এর গুণমান এবং এতে কতটুকু গ্রাফিক্স আছে তা কেনার আগেই জেনে রাখতে হবে।

সকল ইউএসবি, ভিডিএ আউটপুট, ল্যান্ডপোর্ট ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে।

ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং এর ব্যবহার, ব্লুটুথ, শেয়ারইট ইত্যাদি আগেই চালু করে দেখে নিতে হবে।

নতুন সব বৈশিষ্ট্য এবং এতে উপলব্ধ থাকা বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে ল্যাপটপ ক্রয়ের আগেই জেনে নিতে হবে।

সিটি স্ক্যান ও এমআরআই সম্পর্কীয় যাবতীয় তথ্য, A Detailed information about CT scan and MRI in Bengali

ল্যাপটপের প্রসেসর ও সিপিইউ কনফিগারেশন ক্ষমতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য বুঝে নিতে হবে।
আজকাল প্রায় সকলেই ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, বিভিন্ন কাজ সহজে করে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি খুব সহায়ক

উপসংহার, Conclusion 

আজকাল প্রায় সকলেই ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, বিভিন্ন কাজ সহজে করে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি খুব সহায়ক, এমনকি বাড়িতে বসেও অনেক কাজ করে নেওয়া যায়, এরজন্য অফিস বা স্কুলে যাওয়ার অপেক্ষা করতে হয়না। তবে ভালো ল্যাপটপ কিনলে কাজের ক্ষেত্রে যেমন সাহায্য হয় তেমনি বিভিন্ন যান্ত্রিক সমস্যা থেকেও দূরে থাকা যায়। আশা করি উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ভালো ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রে আপনাদের সহায়তা করবে।

Recent Posts