নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ: ডা. নাসিমা আক্তারের জীবনী, Biography of Dr. Nasima Akter in Bengali


বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের তালিকায় নাসিমা আক্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ড. নাসিমা আক্তার পেশায় একজন নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। তিনি নিউক্লিয়ার কার্ডিওলজির গবেষণা এবং ভ্রূণীয় অনিয়মের নুচাল ট্রান্সসুয়েন্সীর গবেষণা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি নিউক্লিয়ার মেডিসিন ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি নিয়েও কাজ করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ‘সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড আল্ট্রাসাউন্ড’ – এর সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাসিমা আক্তার ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে নিউক্লিয়ার মেডিসিন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন।

নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ: ডা. নাসিমা আক্তারের জীবনী

প্রারম্ভিক জীবন বৃত্তান্ত, Early Life of Dr. Nasima Akter  

নাসিমা আক্তারের জন্ম হয় ১৯৭০ সালে । তিনি বাংলাদেশের ঢাকা শহরের নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জাভেদ আখতার এবং মাতার নাম মধু ইরানি।

সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর জীবনী, Biography of Syed Mujtaba Ali in Bengali

ডা. নাসিমা আক্তারের শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন দিক, Educational Experiences of Dr. Nasima Akter

নাসিমা আক্তার শ্যামপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। অতঃপর সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৯৫ সালে উক্ত কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন তিনি; এর কিছুকাল পর, ২০০১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.ফিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর নাসিমা উচ্চ স্তরের শিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে জাপানে পাড়ি জমান। সেখানে কানজওয়া সেইরইয়ো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীকালে জাপানের কাগওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধাত্রীবিদ্যা সংক্রান্ত আলট্রাসনোগ্রাফি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন তিনি ।

ডা. নাসিমা আক্তারের শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন দিক

করুণাময়ী শ্রীশ্রী মা সারদার জন্ম বৃত্তান্ত ও জীবনী, Biography of Shri Shri Maa Saroda in Bangla

ডা. নাসিমা আক্তারের কর্মজীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা, Career Experiences 

নাসিমা আক্তারের কর্মজীবন বাংলাদেশেই শুরু হয়। ১৯৯৮ সালে, তিনি ঢাকা স্থিত ‘বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন’ -এ নিউক্লিয়ার মেডিসিন চিকিৎসক হিসাবে নিজের কাজ শুরু করেন। নিউক্লিয়ার মেডিসিন চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি নির্দিষ্ট অসুস্থতা নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এই পদ্ধতিগুলিতে রেডিওফার্মাসিউটিক্যালস নামক তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিউক্লিয়ার মেডিসিন পদ্ধতির মাধ্যমে হাইপারথাইরয়েডিজম, থাইরয়েড ক্যান্সার, লিম্ফোমাস ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা করা হয়।

ডা. নাসিমা আক্তারের কর্মজীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা

পরবর্তী সময়ে মহিলাদের গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে নুচাল ট্রান্সসুয়েন্সী ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ব্যতিক্রমসমূহ নিয়ে গবেষণা করেছিলেন তিনি। তিনি গ্রেভস রোগের গবেষণা করার জন্য রেডিওয়ডিন থেরাপীও ব্যবহার করেন। গ্রেভস রোগটি একটি অটোইমিউন ডিসঅর্ডার, সহজভাবে বলতে গেলে এটি মূলত ইমিউন সিস্টেমের একটি ব্যাধি যা থাইরয়েড গ্রন্থিটিকে অতিরিক্ত পরিমাণে পরিণত করে, এক্ষেত্রে শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভুলভাবে শরীরের নিজস্ব কোষের উপর আক্রমণ করে। এই রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রেডিও আয়োডিন থেরাপির সাথে নিষ্ক্রিয় আয়োডিন সহায়ক ওষুধের ব্যবহার নিয়ে তদন্ত করছেন তিনি।

নাসিমা আক্তার রেডিওট্রাসার উন্নত করে সিজোফ্রেনিয়া, এবং সিগমা রিসেপ্টর ইমেজিংয়ের মাধ্যমে টিউমার বৃদ্ধি তথা ডিমেনশিয়া, এবং স্কিটসোফ্রিনিয়া তদন্তের জন্য ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করেছিলেন । কর্মজীবনে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ৪০ টি জার্নালে নিজের লেখার মাধ্যমে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন, তাছাড়া দেশে এবং বিদেশে ১৫ টি প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন।

গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে

বিশ্ববন্দিত কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত’র জীবনী, Biography of Michael Madhusudan Dutta in Bengali   

চিকিৎসা জগতে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কার প্রাপ্তি, Receiving awards for special contributions to the medical world

তরুণ বিজ্ঞানী হিসাবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে নাসিমা আক্তারের বিশেষ অবদান রয়েছে। নিজের কাজের জন্য বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০১০ সালে বিএএস-টিডব্লিউএএস ‘তরুণ বিজ্ঞানী পুরস্কার’ লাভ করেন; এছাড়াও পেয়েছেন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অফ নিউক্লিয়ার মেডিসিন’- এর স্বর্ণ পদক।  ২০১৩- সালে ওষুধ এবং প্রাণ বিজ্ঞানে তাঁর অগ্রণী ভূমিকার জন্য তাঁকে ‘এলসেভিয়ার ফাউন্ডেশন’ পুরস্কারের সঙ্গে সম্মানিত করা হয়। এলসেভিয়ার পুরস্কারের জন্য ৩,৯১,২৬২ টাকা পুরস্কার ছাড়াও ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভ্যান্সমেন্ট অফ সায়েন্স বোস্টন’ এর সভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি।

উপসংহার, Conclusion 

ড. নাসিমা আক্তার অনেক কম বয়সেই চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিভিন্ন গবেষণার দ্বারা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। নিউক্লিয়ার মেডিসিন চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি ব্যবহারের বিষয়ে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। ১৯৯৮ সাল থেকে তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি নিজের কাজের দ্বারা চিকিৎসা জগতে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন।

Frequently Asked Questions

নাসিমা আক্তার কে?

ড. নাসিমা আক্তার একজন পেশায় নিউক্লিয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।

নাসিমা আক্তার কবে জন্মগ্রহণ করেন?

1970 সালে।

নাসিমা আক্তারের কর্মজীবন কবে শুরু হয়?

১৯৯৮ সালে।

Recent Posts