স্বনামধন্য সাহিত্যিক তথা অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের জীবনী, Biography of Bangladeshi poet Humayun Azad in Bengali


হুমায়ুন আজাদ একাধারে একজন বিখ্যাত বাংলাদেশি কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতিক ভাষ্যকার, কিশোরসাহিত্যিক, গবেষক এবং অধ্যাপক ছিলেন। অন্যদিকে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক হিসেবেও বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন; তিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারবিরোধিতা, যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ১৯৮০-এর দশক থেকে পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর বিখ্যাত উক্তি :

স্বনামধন্য সাহিত্যিক তথা অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের জীবনী

‘এখনো বিষের পেয়ালা

ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয়নি,

তুমি কথা বলো।’

                             – হুমায়ুন আজাদ।

হুমায়ুন আজাদের প্রাথমিক জীবন বৃত্তান্ত, Early Life 

হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল ( ১৪ বৈশাখ, ১৩৫৪) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে বাংলাদেশ) অধীনস্থ বিক্রমপুরের কামারগাঁয় তাঁর মাতামহের বাড়িতে জন্ম নেন; যা বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার অন্তর্গত। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় হুমায়ুন কবীর। পরবর্তী সময়ে, ১৯৮৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর নামটি পরিবর্তন করে তিনি বর্তমান নাম ধারণ করেন। তাঁর বাবা আবদুর রাশেদ প্রথম জীবনে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ করেছিলেন এবং পরে পোস্টমাস্টার পদে চাকরি করেন, কিছুকাল চাকরির পর ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন। অন্যদিকে মা জোবেদা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। পিতামাতার তিন পুত্র এবং দুই কন্যার মধ্যে হুমায়ূন ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। 

হুমায়ুন আজাদের প্রাথমিক জীবন

করুণাময়ী শ্রীশ্রী মা সারদার জন্ম বৃত্তান্ত ও জীবনী, Biography of Shri Shri Maa Saroda in Bangla

লেখার মাধ্যমে শৈশবকাল বর্ণনা, childhood memoirs

হুমায়ূন রাড়িখাল গ্রামে ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত নিজের শৈশব জীবন কাটিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর লেখায় বিভিন্ন ভাবে রাড়িখাল গ্রামের বর্ণনা উঠে আসে; গ্রাম সম্বন্ধে হুমায়ূন “রাড়িখাল : ঘুমের ভেতরে নিবিড় শ্রাবণধারা” নামে একটি লেখা প্রকাশ করেন। হুমায়ূন আজাদের মতে শৈশব ও কৈশোরকাল ছিল তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়, সেই সময়কালের বর্ণনা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে  “ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না” (১৯৮৫), “নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু” (২০০০), “শ্রাবণের বৃষ্টিতে রক্তজবা” (২০০২) ইত্যাদি বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করেন। হুমায়ূন আজাদের গ্রামের মাইল দুয়েক দক্ষিণে রয়েছে পদ্মা নদী, রাতের বেলায় নদীতে স্টিমার চলার ধ্বনি শৈশবে তাঁকে প্রভাবিত করেছিল, তাই তিনি নিজের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম দেন “অলৌকিক ইস্টিমার” (১৯৭৩)।

লেখার মাধ্যমে শৈশবকাল বর্ণনা

হুমায়ুন আজাদের শিক্ষাজীবন, Education 

১৯৫২ সালে হুমায়ূন আজাদ প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেছিলেন দক্ষিণ রাড়িখাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, সেখানে তিনি তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত মোট চার বছর অধ্যয়ন করেন। পরে তিনি স্যার জে সি বোস ইন্সটিটিউটে চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন। ছেলেবেলা থেকেই তিনি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। উক্ত বিদ্যালয় থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৯৬২ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন (মাধ্যমিক) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

হুমায়ুন আজাদের শিক্ষাজীবন

লোকশিল্পের রূপকার তোফায়েল আহমদের জীবনী, Biography of Tofayel Ahmed, researcher of folk art in Bengali

উচ্চশিক্ষা লাভ, Higher Education 

উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ১৯৬২ সালে হুমায়ূন আজাদ ঢাকায় চলে আসেন। মানবিক বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকা সত্বেও তিনি বাবার ইচ্ছায় ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৬৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন তিনি। ১৯৬৭ সালে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি এবং ক্রমে ১৯৬৮ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

হুমায়ুন আজাদের কর্মজীবন, Career

১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজে প্রভাষক হিসাবে মাত্র ২২ বছর বয়সে হুমায়ূনের কর্মজীবন শুরু হয় । সেখানে কিছুকাল কাজ করার পর ১৯৭০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসাবে নিযুক্ত হন। একই বছরের ১২ ডিসেম্বর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সালে হুমায়ূনের প্রথম গবেষণা গ্রন্থ “রবীন্দ্রপ্রবন্ধ: রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তা” প্রকাশিত হয়। একই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি কমনওয়েলথ বৃত্তি লাভ করে ভাষাবিজ্ঞান পড়ার জন্য স্কটল্যান্ডে পাড়ি দেন।

হুমায়ুন আজাদের কর্মজীবন

১৯৭৬ সালে হুমায়ূন আজাদ স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল “বাংলা ভাষায় সর্বনামীয়করণ”। উক্ত গবেষণাপত্র ১৯৮৩ সালে ‘প্রোনোমিনালাইজেশন ইন বেঙ্গলি’ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড’ থেকে প্রকাশ করা হয়। হুমায়ূন এডিনবরায় গবেষণাকালীন সময়ে রবার্ট ক্যাল্ডরের সহযোগিতায় কবি জীবনানন্দ দাশ এবং নিজের কিছু কবিতা ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, যা “লিডস বিশ্ববিদ্যালয় জার্নাল” এবং এডিনবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের “চ্যাপম্যান” সাময়িকপত্রে প্রকাশিত হয়।

১৯৭৮ সালের ১ নভেম্বর হুমায়ূন আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন এবং এর কিছুকাল পর বাংলা বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৬ সালে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।

বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদিন, Biography of Zainul Abedin in bengali

হুমায়ুন আজাদের ব্যক্তিগত জীবন, Personal Life 

হুমায়ুন আজাদ ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নকালে লতিফা কোহিনুর নামের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচিত হন; ১৯৭৫ সালের ১২ই অক্টোবর টেলিফোনে তাদের বিবাহ হয়। সেসময় হুমায়ূন ছিলেন স্কটল্যান্ডে আর লতিফা বাংলাদেশে। পরবর্তী সময়ে তাদের দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এই দম্পতি মেয়েদের নাম রেখেছিলেন মৌলি আজাদ, স্মিতা আজাদ এবং পুত্র অনন্য আজাদ। 

হুমায়ুন আজাদের ব্যক্তিগত জীবন

সাহিত্যকর্ম: হুমায়ুন আজাদের গ্রন্থতালিকা, Literary work: Humayun Azad’s bibliography

স্নাতক অর্জনের পর থেকেই হুমায়ুন আজাদের সাহিত্যচর্চার শুরু হয় কবিতা লেখার মাধ্যমে; তবে ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন তাঁর “ঘড়ি বলে টিক টিক” শিরোনামে লেখা প্রথম প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিল ‘দৈনিক ইত্তেফাক’- এর শিশুপাতা ‘কচিকাঁচার আসরে’। শৈশবকালে তিনি উক্ত পত্রিকায় একাধিক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। হুমায়ুন আজাদের ৭ টি কাব্যগ্রন্থ, ১২ টি উপন্যাস, ২২ টি সমালোচনা গ্রন্থ, ৭ টি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ, ৮ টি কিশোরসাহিত্য এবং অন্যান্য সকল প্রবন্ধসংকলন মিলিয়ে ৬০-এরও অধিক গ্রন্থ জীবদ্দশায় তথা মৃত্যু পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত হয়।

১৯৯২ সালে হুমায়ূনের নারীবাদী গবেষণা-সংকলনমূলক গ্রন্থ ‘নারী’ প্রকাশের পর বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং ১৯৯৫-২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বইটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। উক্ত বই তাঁর বহুল আলোচিত গবেষণামূলক কাজ হিসাবেও স্বীকৃতি পেয়েছিল। এছাড়াও তাঁর ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ উপন্যাসটি পাঠকমহলে বিতর্কের সৃষ্টি করে। ১৯৯২ সালে তাঁর রচিত প্রবচন সংকলন ‘হুমায়ুন আজাদের প্রবচনগুচ্ছ’ নামে প্রকাশিত হয়। 

সাহিত্যকর্ম

হুমায়ুন আজাদ সর্বপ্রথম ছোটগল্প লিখেছিলেন এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করার পর স্কটল্যান্ড থেকে দেশে ফিরে এসে, তিনি গল্পটির নাম দিয়েছিলেন ‘অনবরত তুষারপাত’; এই গল্পটি ১৯৭৯ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকাতে প্রকাশ করা হয়। উক্ত গল্প সহ ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত লেখা আরও পাঁচটি গল্প তিনি ‘যাদুকরের মৃত্যু’ (১৯৯৬) বইতে সংকলিত করেছিলেন। এরপর হুমায়ূন শিশুকিশোরদের জন্য আরো তিনটি গল্প লিখেছিলেন যেগুলো তিনি কিছু শিশুতোষ কবিতা সহ ‘বুকপকেটে জোনাকি পোকা’ (১৯৯৩) গ্রন্থে সংকলন করেন। তিনি বইটির শুরুতে বলেছিলেন,

“কিশোরকিশোরীদের জন্য আমি তিন দশকে লিখেছি কিছু প্রবন্ধ, কয়েকটি কবিতা, তিনটি গল্প। প্রবন্ধগুলো একটু অন্য ধরনের; শব্দ, ভাষা, আর কবিতা সম্পর্কে; তাতে স্বপ্নের কথা আছে বেশি করে। কবিতাগুলোতেও তাই; গল্পগুলোতেও। এগুলোকে এক বইতেই রাখলাম, কেননা এটা স্বপ্নের বই। এগুলোকে গদ্যে লিখেছি বা ছন্দে লিখেছি, তবে এগুলো একই স্বপ্নে লেখা।”

সম্রাট অশোকের জীবনচরিত – Life Story of emperor Ashoka in Bengali

হত্যা প্রচেষ্টা, Murder Attempt 

হুমায়ুন আজাদের ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ উপন্যাসটি ২০০৩ সালে ইত্তেফাক পত্রিকার ঈদ সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছিল; পরে ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত একুশে বইমেলাতে উপন্যাসটি সম্পূর্ণভাবে বই আকারে প্রকাশিত হলে দেশের মৌলবাদী গোষ্ঠী তাঁর প্রতি ক্রুদ্ধ হয় এবং বিভিন্ন স্থানে হুমায়ুনের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়। তিনি উক্ত উপন্যাসে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীকে পরোক্ষভাবে ফ্যাসিবাদী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন, তারই জের ধরে ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাড়িতে যাওয়ার পথে তিনি ঘাতকদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হন ।

হত্যা প্রচেষ্টা

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নির্দেশে তিনি প্রথমে বাংলাদেশের ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে  চিকিৎসা লাভ করেন এবং পরে হুমায়ুন আজাদকে চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবেই থাইল্যান্ডে পাঠানো হয় এবং তিনি সেখান থেকে অনেকটা সুস্থ হয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন । হামলাকারী কে ছিল তা অনেক দিন ধরে অজানা থাকে; কিন্তু পরবর্তী সময়ে জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) নামক ইসলামি জঙ্গী সংগঠনের এক শীর্ষনেতা শায়খ আব্দুর রহমান পরবর্তীতে হুমায়ুন আজাদ এবং  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম ইউনুসকে হত্যার নির্দেশ দেবার কথা স্বীকার করে। 

রাজনৈতিক-সামাজিক সমালোচনা, Socio-political criticism

১৯৮০-র দশকের শেষের দিক থেকে হুমায়ুন আজাদ সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন এবং পাশাপাশি খবরের কাগজ নামীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় তিনি সম্পাদকীয় নিবন্ধ লিখতে শুরু করেন। সামরিক শাসনের বিরোধিতা দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক বিষয়ে লেখার সূত্রপাত হয়। “মাতাল তরণী”(১৯৯২) ছিল হুমায়ূন আজাদের রাজনৈতিক-সমাজ সমালোচনার সংকলনগ্রন্থ।

রাজনৈতিক-সামাজিক সমালোচনা

হুমায়ুন আজাদের মৃত্যু, Death

 ২০০৪ সালের ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণার বৃত্তি নিয়ে হুমায়ূন আজাদ জার্মানিতে চলে যান; এর কিছুদিন পর ১১ আগস্ট রাতে একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রত্যাবর্তনের পর নিজের আবাসস্থলে আকস্মিকভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। ১২ আগস্ট তাঁর আবাসস্থলের নিজ কক্ষে হুমায়ূনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর পর জার্মান সরকারের তত্ত্বাবধানে মিউনিখে তাঁর নিজ বাসভবনে পাওয়া সব জিনিসপত্র ঢাকায় হুমায়ূনের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাঁর মরদেহ কফিনে করে জার্মানি থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাযার নামাজ শেষে তাঁর নিথর দেহ রাড়িখালে নিয়ে সেখানেই সমাহিত করা হয়। হুমায়ূন আজাদের কবর সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে একটি বইয়ের আকৃতি দিয়ে বানানো হয়েছিল।

হুমায়ুন আজাদের মৃত্যু

পুরস্কার এবং সম্মাননা, Rewards and Honour 

● বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৮৬(সামগ্রিক অবদান)

● অগ্রণী ব্যাংক-শিশু সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬), শিশু সাহিত্য

● মার্কেন্টাইল ব্যাংক পুরস্কার (২০০৪ সালে)

● একুশে পদক ২০১২, ভাষা ও সাহিত্য(মরণোত্তর)

পুরস্কার এবং সম্মাননা

উপসংহার, Conclusion 

প্রচলিত ধ্যানধারণাগুলোর বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত অভীষ্ট এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারের বিরুদ্ধে কলম তুলে বিশেষভাবে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিলেন এই প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ। গতানুগতিক চিন্তাধারাকে তিনি সচেতনভাবেই পরিহার করেছিলেন। যা ভাবতেন তাই সাহসের সাথে লিখতেন বলে হুমায়ূন অনেকেরই বিরাগভাজন হয়ে উঠেছিলেন। তিনি জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি অতি বিতর্কিত সাহিত্যিকও ছিলেন। 

সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ

Frequently Asked Questions

হুমায়ূন আজাদ কে?

হুমায়ুন আজাদ একাধারে একজন বিখ্যাত বাংলাদেশি কবি, ঔপন্যাসিক, ভাষাবিজ্ঞানী, সমালোচক, রাজনীতিক ভাষ্যকার, কিশোরসাহিত্যিক, গবেষক, এবং অধ্যাপক ছিলেন।

হুমায়ূন আজাদ কবে জন্মগ্রহণ করেন?

১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল।

হুমায়ূনের মাতা পিতার নাম?

বাবা আবদুর রাশেদ

– মা জোবেদা খাতুন

হুমায়ূনের প্রথম গবেষণা গ্রন্থ কোনটি?

“রবীন্দ্রপ্রবন্ধ: রাষ্ট্র ও সমাজচিন্তা”।

হুমায়ূনের প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কি?

“অলৌকিক ইস্টিমার”

Recent Posts